বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যু হয় ১৯৯৬ সালে। সেই সময় থেকেই সালমানের পরিবারের দাবি- আত্মহত্যা নয়, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
তখন আত্মহত্যা হিসেবে দেখিয়ে পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা নথিভুক্ত করলেও তাতে আপত্তি জানায় সালমান শাহর পরিবার। সালমানের বাবা কমরুদ্দীন আহমেদ হত্যার অভিযোগ তোলেন। কমরউদ্দিনের মৃত্যুর পর সালমানের মা নীলা চৌধুরী ওই মামলা চালাচ্ছেন।
পুত্রবধূ সামিরা হক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ, ১১ জনকে ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে আদালতে আবেদন করেন নীলা চৌধুরী।
সেই আসামিদের একজন সালমান শাহর বিউটিশিয়ান রাবেয়া সুলতানা রুবি সালমানের মৃত্যুর বাইশ বছর পর সোমবার ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আত্মহত্যা নয়, হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হয়েছিলেন সালমান শাহ এবং তা করিয়েছিলেন তারই স্ত্রী সামিরা ও তার পরিবার।’
এর পর আবারো আলোচনায় আসেন সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হক। কিন্তু কোথায় আছেন এই সামিরা।
সামিরার বাবা জাতীয় দলের সাবেক উইকেটকিপার-অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা। মা থাইল্যান্ডের নাগরিক চট্টগ্রামের বিউটি পার্লার ব্যবসায়ী লুসি।
মাত্র ২১ বছর বয়সে মা নীলা চৌধুরীর বান্ধবীর মেয়ে সামিরাকে বিয়ে করেন সালমান শাহ। বিয়ের পর বেশ ভালোভাবেই তাদের সংসার জীবন কাটছিল। মায়ের মতো সামিরাও বিউটি পার্লারের কাজে বেশ আগ্রহী ছিলেন এবং ঢাকায় একটি বিউটি পার্লারও খুলেছিলেন সামিরা।
তবে এক সময় সালমান-শাবনুর জুটিকে নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে-বাইরে কানাঘুষা শুরু হয়। আর এতে করে সালমানের সঙ্গে সামিরার মনোমালিন্য ঘটতে থাকে।
এরপর সালমানের মৃত্যু হলে তার মা নীলা চৌধুরী অভিযোগ করেন, সামিরার সঙ্গে বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এবং এ দু’জন মিলে সালমানকে হত্যা করেছে।
সে সময় সামিরাও পাল্টা অভিযোগ করেন, নীলা চৌধুরীই আজিজ ভাইসহ অনেক পুরুষকে তার বাড়িতে নিয়ে আসত এবং এটা নিয়ে সালমান ও তার বাবা নীলার উপর ক্ষুদ্ধ ছিলেন। এছাড়া সামিরা পুরো ঘটনার জন্য সালমান-শাবনুরের প্রেমকেও দায়ী করেন।
এক পর্যায়ে একেবারে আড়ালে চলে যান সামিরা। সালমানের মৃত্যুর কয়েক বছর পরই তিনি বিয়ে করেছিলেন মুস্তাক ওয়াইজ নামে এক ব্যবসায়ীকে। তাকে নিয়ে থাইল্যান্ডে পেতেছেন নতুন সংসার। বেশ সুখেই আছেন তিনি জৌলুসের জীবন নিয়ে। সেই সংসারে তিন সন্তানের জননী সামিরা। বড় ছেলে ও ছোট দুই মেয়ে।
সেখানে সামিরার ছোট দুই বোন ফাহরিয়া হক ও হুনায়জা শেখ তাদের স্বামী সন্তান নিয়ে বাস করেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশে খুব একটা আসেন না। আসলেও এড়িয়ে চলেন মিডিয়া বা কোলাহল। একান্তই নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করেন। সালমানের মৃত্যুর পর থেকেই নিজেকে সবকিছুর আড়ালে নিয়ে যান তিনি।