নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘুড়ি উৎসবে মেতেছে রাজধানীর পুরান ঢাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিভিন্ন বয়সী লোকেরা ভবনের ছাদ থেকে রঙ-বেরঙের ঘুড়ি উড়িয়ে উৎসব পালন করছে।
প্রায় প্রতিটি ভবনের ছাদেই সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গান আর আড্ডার সঙ্গে উড়ছে হাজারও ঘুড়ি। ছাদে ছাদে জ্বলছে বাহারি রঙের আলো। তার সঙ্গে মেতেছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ।
পৌষের শেষ দিন প্রতি বছরই এমন উৎসবে মেতে ওঠে রাজধানীর পুরান ঢাকাবাসী। এই ঘুড়ি উৎসবকে ঐতিহ্যের বন্ধনে আবদ্ধ করে নিয়েছে আমোদপ্রেমী এই মানুষেরা।
সাকরাইন উৎসব হিসেবে পরিচিত এই জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন প্রসঙ্গে কথা হয় পুরান ঢাকার বাসিন্দা খান মুহাম্মদ মুরসালীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতি বছর পৌষ মাসের শেষ দিন শত বছরের বেশি সময় ধরে ‘পৌষ-সংক্রান্তি’ পালিত হয়ে আসছে। বিশেষত এ উৎসবটি পুরান ঢাকায়ই ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করা হয়।
বিগত দুই বছর এ উৎসবে যোগ দিতে দক্ষিণখান এলাকা থেকে পুরান ঢাকায় আসেন বদিউল হক দেওয়ান। তিনি বলেন, অসাধারণ লাগে এই আয়োজন। দিনের বেলায় ঘুড়ি ওড়াতে ভালো লাগে। সন্ধ্যায় আতশবাজির ঝলকানিতে অসম্ভব রকমের ভালো লাগা কাজ করে।
প্রথমবার ঘুড়ি উৎসব দেখতে উত্তরা থেকে এসেছেন বহ্নি। তিনি বলেন, সন্ধ্যায় আতশবাজির ঝলকানির সঙ্গে মুখ থেকে আগুন বের করার বিষয়টি সবচেয়ে আকর্ষণীয়। আমি ভিডিও দেখেছিলাম। আজকে সশরীরে উপস্থিত হয়েছি সামনাসামনি দেখার জন্য।
পুরান ঢাকায় ৩২ বছর ধরে এই উৎসব দেখছেন খোদেজা খাতুন। মানিকগঞ্জে জন্ম হলেও পুরান ঢাকার পুত্রবধূ হিসেবে এসেছিলেন। সেই থেকে দেখছেন এই ঘুড়ি উৎসব।
তিনি বলেন, আগে ঘুড়ি ওড়ানো বেশি হতো, আর সন্ধ্যায় আগুন খেলা। বড় আয়োজন করে বাড়িতে বাড়িতে পিঠা-পুলির উৎসব চলতো। এখনো হয়, তবে পরিবারে পরিবারে। ১০-১২ বছর ধরে আধুনিকায়নের নামে ডিজে যোগ হয়েছে। এর ফলে নিজের সংস্কৃতি ভুলতে বসেছে মানুষ।