তৌহিদ আহম্মেদ রেজা: সাভারে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে সন্তানদের ফেলে যাওয়া মা সহকারী(ভূমি) কমিশনার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মাহফুজ।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে সাভারে এক মাকে ফেলে পালিয়েছে তাঁরসন্তানেরা। এদিকে সমাজের কাছে সন্তানেরা বদনাম আশঙ্কায় মা পরিচয় প্রকাশ করছেননা তাঁর সন্তানদের। এমন পরিস্থিতিতে অসহায় মায়ের সব দায়িত ¡নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সাভারের সহকারী(ভূমি) কমিশনার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মাহফুজ।
রাতে অসহায় মাকে সাভার উপজেলার হেমায়েতপুর জয়নাবাড়ী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমর বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানালে তাঁকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান সহকারী (ভূমি) কমিশনার আবদুল্লাহ আল মাহফুজ।
৫০ শয্যা বিশিষ্ট সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখানে বৃদ্ধা একজন ‘ম্যাজিস্ট্রেটের মা’ পরিচয়েই সেবা নিচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, রাতে ওই বৃদ্ধা কে দেখেই তাঁদেও সন্দেহ হয়। কেউ তাঁর কাছে ভিড়ছিলেননা। মনে হচ্ছিল, না খেতে পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর আগে এলাকাটিতে বেশ কয়েক জন করোনা রোগী পাওয়া গেছে। ফলে ওই বৃদ্ধা কে তাঁর সন্তানেরা ফেলে পালিয়েছে। ঝামেলা হওয়ার ভয়ে ওই অসহায় বৃদ্ধা মা সন্তানদের ঠিকানা বলছেন না। কার বাসায় ছিলেন, তা-ও জানা যাচ্ছেনা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল-মাহফুজ বলেন, ‘অসহায় ওই বৃদ্ধা মাকরোনায় আক্রান্ত কিনা, তা পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে মহাখালীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে (আইপিএইচ) পাঠানো হবে। যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাহলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হবে। আর করোনা পজিটিভ না এলে তিনি আমার ব্যবস্থাপনাতেই থাকবেন। ব্যক্তিগত ভাবে আমার যা কিছু করার দরকার, এই মায়ের জন্য সবকিছুই আমি করব।’
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ. মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা বলেন, ‘ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে এরা কেমন সন্তান! সন্তান নামের কলঙ্ক। আমরা এ মায়ের পরীক্ষা করাব। মায়ের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা আমরা নিশ্চিত করব। এই মায়ের সব দায়িত্ব এখন আমাদের। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী আজ থেকে এই বৃদ্ধা মায়ের সন্তান ।