ইউক্রেন ইস্যুতে ব্যাপক চাপের মুখে জার্মানি। ইউক্রেনের অনুরোধে সেখানে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ভারী অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলেও রাশিয়া থেকে এখনো তেল ও গ্যাস আমদানি করতে হচ্ছে জার্মানিকে। ফলে ইউক্রেনকে দ্রুত অস্ত্র সরবরাহ করা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ায় নাৎসি বাহিনীর অভিযানের পর থেকে জার্মানির চেষ্টা ছিল অতীতের সবকিছু ভুলে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নে কাজ করা। কিন্তু ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই সম্পর্কের সেই গতিপথ ধীরে ধীরে পাল্টে যেতে শুরু করেছে।
বিশেষ করে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানসহ ইইউ ও ন্যাটোর বিরুদ্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উসকানি ও হুমকির কারণে গত ৩০ বছরেও রাশিয়াকে বুঝে উঠতে পারেনি বার্লিন। তবে রাশিয়া থেকে সব ধরনের জ্বালানি তেল ও গ্যাসসহ নানা পণ্য আমদানি এখনই বন্ধ করে দেওয়া অসম্ভব জার্মানির জন্য।
রুশ বাহিনীকে ঠেকাতে ইউক্রেনের চাওয়া ‘আক্রমণাত্মক’ ভারী অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাংক ও ফাইটার জেট। কিন্তু তা সরবরাহ করা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে জার্মানি।
এমন পরিস্থিতিতে জার্মান চ্যান্সেলর শলজের স্পষ্ট ও জোরালো নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে ইউক্রেনে শলজ সরকারের ‘নিষ্ক্রিয়’ ভূমিকার সমালোচনা এখন জার্মান পার্লামেন্টের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু।
এদিকে ইউক্রেনকে ফাইটার জেট, ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রসহ ভারী অস্ত্র সরবরাহ করলে নতুন করে ‘নব্য নাৎসী বাহিনী’ অপবাদের ভয়সহ ন্যাটো তথা জার্মানি যাতে যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে, তা সবার আগে নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করছেন ওলাফ শলজ।
দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার তেল-গ্যাসের ওপর থেকে নির্ভরতা এখনই দূর না হলেও জ্বালানি আমদানি বন্ধের মাধ্যমে রাশিয়ার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ আটকে দিয়ে মস্কোর ওপর চাপ আরও বাড়াতে পারে জার্মানি।
আবার আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত হতে পারে জার্মানির শিল্পোন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশাল এক ক্ষতি, যা কাটিয়ে উঠতে লেগে যেতে পারে কয়েক দশক।