শরীয়তপুরের জাজিরায় গরু চোর ধরতে কবিরাজের কাছ থেকে রুটি পড়া এনেছিলেন শওকত ব্যাপারী নামে এক ব্যবসায়ী। তবে রুটি খেয়ে নিজেই মারা গেছেন। এছাড়া অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আরো একজন।
৫৫ বছর বয়সী শওকত উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের কালু ব্যাপারী কান্দি গ্রামের ওহাব বেপারীর ছেলে। আহত ৭০ বছরের মান্নান হাওলাদারও একই গ্রামের বাসিন্দা।
নিহতের ভাই লিয়াকত ব্যাপারী জানান, শওকত বেপারী পেশায় গরু ব্যাবসায়ী ছিলেন। ১৭ মে রাতে তার গোয়ালঘর থেকে গরু চুরি হয়। চুরি যাওয়া গরু উদ্ধারে স্থানীয় আবু ব্যাপারীর পরামর্শে ফরিদপুরের এক কবিরাজের কাছে যান তিনি। পরে ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে গরু চোর শনাক্ত করতে শওকতকে রুটি ও আয়না-পড়া দেন কবিরাজ। চোর ধরা না পড়লে টাকা ফেরত দেওয়ারও নিশ্চয়তা দেন তিনি।
২১ মে বিকেলে রুটি ও আয়না পড়া নিয়ে বাড়িতে আসেন শওকত। রোববার কবিরাজের আয়নায় চোর দেখা না গেলে সন্দেহভাজনদের রুটি পড়া খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে অন্যদের খাওয়ানোর আগে নিজেও সেই রুটি খান শওকত। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ সময় আরেকটি রুটি খেয়ে মান্নান হওলাদারও অসুস্থ হয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে দুজনকেই দ্রুত ঢাকা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন স্বজনরা। ঢাকায় নেয়ার পথেই মারা যান শওকত। আর মান্নান হাওলাদার বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহতের ছেলে রাজিব হোসেন বলেন, ওই কবিরাজের নাম ইসরাফিল। তার বাড়ি ফরিদপুর। কয়েকটি রুটি পড়ে দিয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে আমার বাবার জন্য একটি রুটি আলাদা করে দিয়েছিলেন। সেই রুটি খেয়েই আমার বাবার মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ওই কবিরাজের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
জাজিরা থানার ওসি মিন্টু মণ্ডল জানান, খবরটি জানার পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
ওসি বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়াই শওকত ব্যাপারীর মরদেহ দাফন করতে চেয়েছিল তার পরিবার। কিন্তু বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় আমরা ময়নাতদন্ত করিয়েছি। প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।