ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার পথে মাঝ আকাশে বিয়ে করলেন কানাডাপ্রবাসী দুই ভ্রমণপিয়াসী খায়রুল হাসান ও সাউদা বিনতে সানজিদা।
রোববার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইট বিজি ৬০৩-এ করে ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার পথে মাঝ আকাশে বিয়ে হয়।
জানা গেছে বাংলাদেশ বিমানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই কাজিসহ দুই পরিবারের ১৬ জন সদস্য উপস্থিতিতে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়।
সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ জীবনের একাধিক সূত্র এ বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পরিচয় গোপন রাখা শর্তে বাংলাদেশ বিমানের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, হ্যাঁ, রোববার ঢাকা থেকে সিলেটগামী বিমানে বিয়ের আয়োজন ছিল। বিয়েতে কাজিসহ বর ও কনেপক্ষের পরিবারের ১৬ জন উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশে এটিই প্রথম বিমানে বিয়ে এবং এটি হচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সহযোগিতায়। কানাডার তৈরি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টার্বো-প্রপ এয়ারক্রাফট বোমবারডিয়ার ড্যাশ-৮ কিউ-৪০০-এ করে তারা ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
মাঝ আকাশে বিমানে বিয়ে সম্পর্কে পাত্র খায়রুল হাসান বলেন, জীবনের এই স্মরণীয় মুহূর্তটাকে আরো স্মরণীয় করে রাখতে এ উদ্যোগ নিয়েছি। আসলে কানাডায় থেকে বাংলাদেশের রোড ট্রিপ খুব মিস করি। ঢাকা এসেই ঘুরেছি। এখন বাকি সময়টাও ঘুরে বেড়াব।
জানা গেছে, ঢাকা থেকে বিমান আকাশে উড্ডয়নের পরপরই বিয়ে পড়ান কাজি ওমর ফারুক। আর এতে দোয়ায় শরিক হন পুরো বিমানের সব যাত্রী। এ সময় বিমানে যাত্রীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। বিমানে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স থেকে অনুমতি নেয়া হয় এক মাস আগে।
নিয়ম অনুযায়ী অন্য সব যাত্রী বিমানে আরোহণের পর নবদম্পতি বর-বধূর সাজে বিমানে আরোহণ করেন। বোর্ডিং পাস থেকে শুরু করে যাত্রার পুরোটা সময় এক আনন্দমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। বিয়ের পরপর অনেক যাত্রী এসে নবদম্পতিকে অভিনন্দন জানান। অনেকে এসে ছবি তোলেন নবদম্পতির সঙ্গে। বিকেলে চা বাগান ঘুরে রাতে ঢাকায় ফেরেন তারা।
পাত্র খায়রুল হাসান কানাডার ভ্যানকুভারে থ্রাইভ ডিজিটাল কোম্পানিতে প্রজেক্ট লিড হিসেবে কর্মরত। পাত্রী সাউদা বিনতে সানজিদা টরন্টোর একটি নামকরা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কর্মরত।
ভ্রমণপিয়াসী খায়রুল হাসান জানান, তিনি দেশের ৬৪টি জেলা ঘুরে বেড়িয়েছেন। এখনো সুযোগ পেলে ঘুরে বেড়ান দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রভিন্সের ভ্যানকুভার থেকে ম্যানিটোবার উইনিপেগ পর্যন্ত পাঁচ দিনে ৫,০০০ কিলোমিটার ড্রাইভ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। এ ছাড়াও টেকনাফ টু টরন্টো নামে এক ট্যুরে ঘুরে বেড়িয়েছেন কানাডার প্যাসিফিক থেকে আটলান্টিক পর্যন্ত। সঙ্গে ছিলেন একঝাঁক বাংলাদেশি ভ্রমণপ্রেমী।