আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলে দখলদার ইসরায়েলের আরও ২ সেনার মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন সেনা কর্মকর্তা। এতে করে ১৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে নিহত মোট ইসরায়েলি সৈন্যের সংখ্যা প্রায় ৮০০ জনে পৌঁছেছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকায় সংঘর্ষে একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা ও এক সৈন্য নিহত হয়েছে বলে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী রোববার জানিয়েছে। সামরিক এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহত দুই সেনা সদস্যই কেফির ব্রিগেডের ৯০তম ব্যাটালিয়নের সঙ্গে যুদ্ধ ছিল।
অবশ্য ইসরায়েলি এই সেনাদের নিহতের বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনও তথ্য দেয়নি দখলদার সেনাবাহিনী।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রকাশিত সামরিক পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বশেষ এই দুই সেনার মৃত্যুসহ নিহত মোট ইসরায়েলি সৈন্যের সংখ্যা ৭৯৮ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছে আরও ৫ হাজার ৩৬৫ ইসরায়েলি সেনা।
এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গত ৫ অক্টোবর থেকে উত্তর গাজায় প্রাণঘাতী আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসকে পুনরায় সংগঠিত হতে বাধা দেওয়ার নামে সেখানে অভিযান চালানোর পাশাপাশি এলাকাটি অবরোধ করে রেখেছে তারা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রায় দেড় মাস আগে আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে উত্তর গাজায় ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এদিকে গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় একদিনে আরও প্রায় একশো ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৩ হাজার ৮০০ জনে পৌঁছেছে।
গাজার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোববার (১৭ নভেম্বর) উত্তর ও মধ্য গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৯৬ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৬০ জন আহত হয়েছেন। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলেছে, বেইত লাহিয়ায় হামলায় ৭২ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছেন এবং মধ্য গাজায় ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।