মোঃ মজিবর রহমান শেখ
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,,
ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র মো. শরীফুল ইসলাম শরীফ। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এই শিক্ষার্থী এত দিন সমাজসেবা অধিদপ্তরের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের অধীনে থেকে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছিল। তবে সম্প্রতি এক চিঠির মাধ্যমে তাকে প্রতিষ্ঠান ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার শিক্ষাজীবন।
শরীফের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গোবিন্দনগর মুন্সিহাট গ্রামে। তার বাবা রমজান আলী একজন দিনমজুর। শরীফ জানান, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম থেকে তার পড়াশোনার যাবতীয় খরচ বহন করা হতো। তবে সম্প্রতি অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রিসোর্স শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামানের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি তার বাবার কাছে পাঠানো হয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়, ভর্তি ফরমের তথ্য অনুযায়ী ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে শরীফের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে। এ কারণে তাকে প্রতিষ্ঠান ছাড়তে হবে। তবে শরীফের দাবি, বয়স যাই হোক, এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত এ কার্যক্রমের আওতায় থাকার নিয়ম রয়েছে। এর আগে অনেক এইচএসসি শিক্ষার্থীরাও এখানে অবস্থান করেছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে তাকে ব্রেইল বই দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছিলেন।
এ বিষয়ে শরীফের গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘শরীফ ছোটবেলা থেকেই অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করছে। ওর পরিবার খুবই গরিব। এখন যদি প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া হয়, তা হলে ওর পড়াশোনা শেষ হয়ে যাবে।’ আরেক বাসিন্দা রুবিনা খাতুন বলেন, ‘শরীফ অনেক মেধাবী ছেলে। ওর এসএসসি পরীক্ষা সামনে। এ অবস্থায় তাকে বের করে দেওয়া হলে তার ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা চাই, অন্তত পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত তাকে সুযোগ দেওয়া হোক।’এদিকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের রিসোর্স শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান জানান, বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী শরীফকে প্রতিষ্ঠান ছাড়তে বলা হয়েছে। তবে সে যদি আবেদন করে, তা হলে পরবর্তী মিটিংয়ে বিষয়টি উপস্থাপন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।