হাফসা ঃ বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমিনুল হক বলেছেন, আজ দেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার মান উন্নয়নের চেয়ে এটিকে ব্যবসায় রূপ দিয়েছে। ইংলিশ মিডিয়াম থেকে শুরু করে বেসরকারি স্কুলগুলোতেও শিক্ষাকে বাণিজ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বড় হুমকি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর পল্লবীর নাহার একাডেমি হাই স্কুল আয়োজিত শিক্ষক-অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মতবিনিময়, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা ব্যবস্থা হয়নি মন্তব্য করে আমিনুল হক বলেন, “আমরা স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার করেছি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো শিক্ষা ব্যবস্থা আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। সন্তানদের মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষকদেরও প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।”
নিরপেক্ষ শিক্ষা পরিবেশের আশ্বাস দিয়ে
তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আমলে শিক্ষকদের জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়েছে। এতে অনেকের চাকরি পর্যন্ত হারাতে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক বা অভিভাবককে আর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য করা হবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা স্বাধীন রাখতে চাই।”
নতুন কারিকুলামে বহুভাষা ও খেলাধুলা বাধ্যতামূলক মন্তব্য করে অভিভাবকদের প্রশ্নের জবাবে আমিনুল হক জানান, বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষা ব্যবস্থায় যুগোপযোগী পরিবর্তন আনা হবে। বাংলা ও ইংরেজির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য তৃতীয় ও চতুর্থ ভাষা বাধ্যতামূলক করা হবে – যেমন আরবি, ফরাসি কিংবা জার্মান। তিনি আরও বলেন, “প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। একইসাথে খেলাধুলাকে বাধ্যতামূলক করা হবে, যাতে তারা সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে এবং ভবিষ্যতে খেলাধুলাকে পেশা হিসেবেও নিতে পারে।”
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে শুরু হওয়া “নতুন কুঁড়ি” প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতায় নতুন উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দেন আমিনুল হক। তিনি বলেন, “আমরা ‘নতুন কুঁড়ি ক্রীড়া’ চালু করব। ১০ থেকে ১৪ বছরের প্রতিভাবান কিশোরদের রাষ্ট্রীয়ভাবে স্কলারশিপ দিয়ে পড়াশোনা ও খেলাধুলার দায়িত্ব নেবে সরকার।”
দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জনগণের সরকার গড়ে উঠলেই শিক্ষা, খেলাধুলা থেকে শুরু করে সমাজের সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। জনগণের সরকারই করবে সমস্যার সমাধান। আমি একজন প্রতিনিধি, ভাই এবং বন্ধু হিসেবে আপনাদের পাশে থাকতে চাই।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাহার একাডেমি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্কুলের এডহক কমিটির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম। এছাড়া বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর-এর যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম মন্টু, পল্লবী থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক কামাল হোসাইন খানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।