মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
অবৈধ জুয়ার অ্যাপের প্রচার, উর্বশী-মিমিকে ইডির তলব নেপালে লুট করা জিনিস কেনা বা বিক্রির বিরুদ্ধে সতর্কতা জারি অস্ট্রেলিয়া সিরিজে খেলবেন না উইলিয়ামসন ডা. শাকিল আহমেদ সাঈদীর ৩০তম জন্মদিন আজ বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারের বৈঠক গণতন্ত্র চর্চা অব্যাহত থাকলে স্বৈরশক্তি মাথাচাড়া দিতে পারে না: মির্জা ফখরুল ‘তরুণদের সম্মিলিত চেষ্টায় বাংলাদেশ উন্নত মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে’ এবার আইটেম গানে সামিরা খান মাহি রাশিয়ার অন্যতম বৃহৎ তেল শোধানাগারে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি না করার অনুরোধ অর্থ উপদেষ্টার

ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় বোরো আবাদে বাড়ছে কৃষকের সেচ খরচ

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১ জানুয়ারী, ২০২১
  • ২৩৫ বার পঠিত

দেশে ইতিমধ্যে বোরো রোপণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় বোরো আবাদে বেড়ে যাচ্ছে কৃষকের সেচ খরচ। ফলে কৃষককে অনেকটা সময় সেচ দিতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর অধিক সেচের কারণে বোরো আবাদে খরচ বেশি হওয়ায় কৃষকদের প্রাকৃতিক সেচের ওপর (বৃষ্টি) নির্ভরশীল আমন ও আউশের আবাদে উদ্বুদ্ধ করছে। গত ৫ বছর ধরে আউশ আবাদের জন্য কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া শুরু হয়েছে। তারপরও বোরো আবাদে কৃষকের দীর্ঘদিনের সম্পৃক্ততায় বোরোতেই অধিক জমি আবাদ করছে। সেচ নির্ভর বোরো আবাদের চাষ গত ১০ বছরে অন্ত ৮ গুণ বেড়েছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) অন্তত ১০৫ জাতের ধানের উদ্ভাবনে এখন দেশের আবাদ উদ্বৃত্ত উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় নানা জাতের ধানের আবাদ হচ্ছে। কৃষি বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভূ-গর্ভস্থ পানির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে প্রতিবছর পানির আধার এলাকাভেদে ৩-৮ মিটার নেমে যাচ্ছে। যে পরিমাণ পানি উত্তোলিত হচ্ছে বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে প্রকৃতি থেকে ওই পরিমাণ পানি রিচার্জ হচ্ছে না। বৃষ্টির পানিতে ভূ-গর্ভস্থ পানির আধার অনেকটা পূর্ণ হয়। কিন্তু পানির স্তর যতো নিচে নেমে যাচ্ছে, বোরোর উৎপাদন খরচ ততোই বাড়ছে। বিশেষ করে হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) আবাদে শুধু সেচের জন্য কৃষককে ব্যয় করতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ অর্থ। বাকি অর্থ ব্যয় হয় সার বীজ কীটনাশকসহ অন্যান্য উপকরণ ও পরিচর্যায়।
সূত্র জানায়, ষাটের দশকের মধ্যভাগে এদেশে প্রথম শুকনো মৌসুমে সেচনির্ভর ধান উৎপাদন শুরু হয়। ওই সময়ে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইরি) উদ্ভাবিত ধানের নামকরণও হয় ইরি-বোরো। মূলত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেড়ে যাওয়ায় অধিক মানুষের মুখে আহার জোগাতেই বোরো ধানের উৎপাদন বেড়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ওই ধানের নামকরণ হয় শুধু বোরো। সত্তরের দশকের প্রথম ভাগে দেশে গভীর নলকূপ বসানোর পালা শুরু হয়। কোরিয়ার কোম্পানি ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম গভীর নলকূপ স্থাপন করে। অনেকের কাছে যা কোরিয়ার ডিপ নামে পরিচিতি। পরে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে গভীর নলকূপ বসানো হয়। প্রায় একই সময়ে ব্রিটিশ কোম্পানি ম্যাকডোনাল্ড এ্যান্ড পার্টনার দূরত্ব না মেনে অগভীর নলকূপ বসানো শুরু করে।
সূত্র আরো জানায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) তথ্যানুযায়ী দেশে বোরো মৌসুমে সচল থাকে অন্তত ২৫ লাখ অগভীর নলকূপ ( শ্যালো নামে অধিক পরিচিত)। নিকট অতীতে ওই নলকূপগুলোতে ১৫ থেকে ২০ ফুট নিচেই পানি মিলতো। কিন্তু বর্তমানে ২৮ থেকে ৩০ ফুট নিচেও আগের মতো নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি মিলছে না। ফলে অনেক কৃষক ৫/৬ ফুট মাটি খুঁড়ে পাম্প বসিয়ে পানি উত্তোলন করছে। বিএডিসির আরেক হিসেবে বলা হয়েছে, দেশে প্রায় ১৭ লাখ অগভীর নলকূপ ডিজেলে চলে আর বিদ্যুতে চলে প্রায় ৮ লাখ। তাছাড়া ১২ হাজার গভীর নলকূপ ডিজেলে চলে আর বিদ্যুতে চলে ৩০ হাজার গভীর নলকূপ।
এদিকে কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে ৩ হাজার ৫শ’ লিটার করে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার হচ্ছে। ৩৯ বছর আগে (১৯৮১ সালে) এক কেজি ধান উৎপাদনে সেচের পানির দরকার হতো প্রায় ২ হাজার লিটার। আর ১০ বছর আগে প্রয়োজন হতো প্রায় ৩ হাজার লিটার পানি। গত বছরের হিসেবে দেখা গেছে প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে সেচের পানির দরকার হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার লিটারেরও বেশি। বর্তমানে বিশে^র অনেক দেশই ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমিয়ে দিয়ে সারফেস ওয়াটার ব্যবহারে জোর দিয়েছে। ভারত, চীন, ভিয়েতনামে সেচ কাজে ভূ-গর্ভস্থ পানি সর্বোচ্চ মাত্রায় সীমিত করা হয়েছে। আইলের মাধ্যমে সেচের পানি সরবরাহ করলে মাটি অনেকটা পানি শুষে নেয়। এজন্য অপচয় রোধে ড্রেনেজ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন হয়েছে। ভারত ও ভিয়েতনাম ধান উৎপাদনে বিশে^ অনেক দূর এগিয়েছে। বাংলাদেশও ওই পথ ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো তা ধীরগতিতে চলছে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে কৃষিবিজ্ঞানী এ কে এম জাকারিয়া জানান, সেচের পানির অপচয় রোধে ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা হয়েছিল। ওই কৌশল বাস্তবায়ন করা গেলে ভূ-গর্ভস্থ পানির সেচের খরচ অনেক সাশ্রয় হবে। শুধু ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভর না করে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়ানো জরুরি। সরকার ইতিমধ্যে ভূ-উপরিস্থ (সারফেস) পানি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com