বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৮ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
কুমিল্লার বুড়িচং সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক গুলিবিদ্ধ কুমিল্লা সদর দক্ষিণে জনপ্রিয়তা অপ্রতিদ্বন্দ্বি আবদুল হাই বাবলু তীব্র তাপপ্রবাহে রিকশাচালকদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ সবুজবাগ থানার পক্ষ থেকে খাবার পানিও স্যালাইন বিতরন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ১৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল পিরোজপুরে তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জিয়াউল গাজী সহ ১০ প্রার্থীর মনোয়নপত্র দাখিল উত্তরায় ট্রাফিক পুলিশের মাঝে ওরস্যালাইন বিতরণ। পাঁচশত টাকায় স্ত্রীকে বন্ধ, গনধর্ষনের স্বীকার স্ত্রী,স্বামী সহ আটক-৪ বিদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার বিধিনিষেধ তুলে দিলো কুয়েত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজলের জয়জয়কার

হুইপ শামসুল হকের জালিয়াতি, বাবুর্চিকে মালিক সাজিয়ে ভূমি বিক্রি

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২১
  • ১৬১ বার পঠিত

জাল-জালিয়াতি করে অন্যের জমি আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম পটিয়া আসনের এমপি ও হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তিনি বাসার বাবুর্চিকে জায়গার মালিক সাজিয়ে বাকলিয়া কর্ণফুলী আবাসিক প্রকল্পের তিন গন্ডা দুই কড়া জমি আত্মসাৎ করেন।

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘শামসুল হক চৌধুরীর জীবনটাই জালিয়াতিতে ভরা। তার জালিয়াতির আরেকটা উদাহরণ হচ্ছে বাবুর্চিকে জমির মালিক সাজিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে জমি আত্মসাৎ করা। তার জালিয়াতিতে সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেকে। শামসুল হকের জালিয়াতির ফলে জমি হারানো ওই পরিবার প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২৫ এপ্রিল বিসিএস প্রশাসনের সদস্য হিসেবে বাকলিয়া কর্ণফুলী আবাসিক প্রকল্পের তিন গন্ডা দুই কড়া জমির বরাদ্দ পান আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শফিকুল হায়দার মজুমদার। ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ওই জমি বিক্রি করে দেন হাজী মোহাম্মদ শফিক আহমেদ নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে। কিন্তু সহজসরল শফিকের জমির ওপর নজর পড়ে বর্তমান জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর। জমি গ্রাসের কাজে তিনি সহযোগিতা নেন হুইপের তৎকালীন ঢাকার বাসার বাবুর্চি মোহাম্মদ সোলেমানের। ২০০১ সালে পরিকল্পনামতো সোলেমান বাবুর্চিকে মোহাম্মদ শফিক আহমেদ সাজিয়ে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য খুরশিদা খানম নামে এক নারীকে রেজিস্ট্রি দেন। ওই দলিলের শনাক্তকারী ছিলেন শামসুল হক চৌধুরী নিজে। ২০০২ সালের মাঝামাঝি জালিয়াতির বিষয়টা বুঝতে পারেন সোলেমান বাবুর্চি। নিজের ভুল বুঝতে পেরে ২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের প্রথম শ্রেণির হাকিম আদালতে হলফনামা দিয়ে জালিয়াতির বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন সোলেমান বাবুর্চি। এ সময় সাড়ে ৮ লাখ টাকার জমি কিনে প্রতারিত হয়েছেন তা বুঝতে পেরে খুরশিদার পরিবার শামসুল হককে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এ সময় এক প্রকার বাধ্য হয়ে তিনি সাড়ে ৮ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে জালিয়াতি করে নেওয়া জমিটি তার ভাই মাহাবুবুল হক চৌধুরীর নামে লিখে নেন। ২০০৬ সালে আমমোক্তারনামা দলিলমূলে জায়গাটির মালিক বনে যান শামসুল হক। জালিয়াতির বিষয়টি জানাজানি হলে ২০০৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর ওই জমির মালিকের ছেলে মোহাম্মদ মোক্তার সিএমপির বাকলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নম্বর ৬৭০। ওই ডায়েরিতে তিনি বিবাদী হিসেবে শামসুল হক চৌধুরীর নাম উল্লেখ করেন। থানায় ডায়েরিতে তিনি উল্লেখ করেন, শামসুল হক চৌধুরী তার পৈতৃক সম্পত্তিতে যেতে বাধা দিয়েছেন। মারধরেরও হুমকি দিয়েছেন।
কী ছিল সোলেমানের সেই হলফনামায় : শামসুল হক চৌধুরীর প্লট জালিয়াতি প্রকাশ্যে আসার পর মুখ খোলেন মোহাম্মদ শফিক আহমেদ সেজে জায়গা রেজিস্ট্রি দেওয়া শামসুল হকের বাসার বাবুর্চি মোহাম্মদ সোলেমান ওরফে সোলেমান বাবুর্চি। ২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর সকালে তিনি চট্টগ্রামের প্রথম শ্রেণির হাকিম আদালতে হাজির হয়ে হলফনামা দেন। ওই হলফনামায় সোলেমান ঘোষণা করেন, ‘আমি ঘোষণাকারী চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার খরনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ কে এম মতিন সাহেবের মাধ্যমে পরিচিতির সূত্রে উপরোক্ত এ কে এম মতিন, মুসলিম উদ্দিন এবং শামসুল হক চৌধুরীর একত্রে ভাড়ায় নেওয়া ঢাকাস্থ বাসায় আমি তাদের অধীনস্থ বাবুর্চি হিসেবে চাকরি নিই। ওইখানে চাকরি করা অবস্থায় চট্টগ্রামে ছুটিতে এলে ১৫ অক্টোবর, ২০০১ সালে শামসুল হক চৌধুরী আমাকে বলেন, তার এক চাচা বর্তমানে খুবই অসুস্থ আছেন। তার পক্ষে বর্তমানে চলাফেরা করা অসম্ভব। তাই তার পক্ষে একটি দলিলে রেজিস্ট্রি দিতে হবে। তার কথামতো রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে শামসুল হক চৌধুরীর উপস্থিত ও অনুগত কর্মচারী হিসেবে দলিলে টিপসই দিই। আমি কোনোরকমে সাধারণ পড়তে পারি ও দস্তখত জানি। কিন্তু শুধু টিপ দিতে হবে বলায় টিপ দিই। আমি উক্ত দলিলের বিষয়ে কিছুই জানতাম না। আমাকে কেউ কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। উক্ত শামসুল হক চৌধুরীও সাক্ষী হিসেবে দস্তখত করেন। ইদানীং সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে বিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত দলিলে গ্রহীতাপক্ষ আমাকে মূল দাতা মনে করে ১৫ অক্টোবর, ২০০১ দলিল সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আমি উক্ত সম্পত্তির মালিক নই এবং আমি উক্ত শামসুল হক চৌধুরীর কথা ও নির্দেশমতো তার চাচার স্থলে টিপ দিয়েছি। এ অবস্থায় ভবিষ্যতের জটিলতা পরিহার করতে প্রকৃত তথ্য ও সত্য বর্ণনা করলাম। ১৫ অক্টোবর, ২০০১ সালে চট্টগ্রাম সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত দলিলে আমার দেওয়া টিপের সত্যতা প্রমাণের জন্য নিম্নে আমার টিপ প্রদান করিলাম। অত্র হলফনামায় বর্ণিত উপরোক্ত বিষয়াদি আমার সজ্ঞান ও বিশ্বাসমতে সত্য আমি স্বয়ং ঘোষণাকারী বিধায় উপরোক্ত বিষয় সম্পর্কে অবগত আছি।’ সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com