৩ বছর আগে টট্টগ্রামের বাকলিয়ার বগারবিল এলাকায় প্রতিবেশী এক ব্যক্তি অপহরণ করে আট বছরের শিশু মো. সিয়ামকে। পরে অপহরণকারীর কাছ থেকে পালিয়ে গেলেও বাড়ির ঠিকানা মনে করতে না পারায় আর পরিবারের কাছে ফিরতে পারেনি শিশুটি। তিন বছর ধরে মো. সিয়াম কেরানীগঞ্জের পানগাঁও কন্টেইনার টার্মিনালের একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করছিল।
সম্প্রতি সিয়ামের পরিবারের এক প্রতিবেশী হারানো বিজ্ঞপ্তি দেখে তাকে চাঁদপুরে দেখার কথা জানায়। সেই সূত্র ধরে চট্টগ্রামের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাকে উদ্ধার করে বুধবার পরিবারের কাছে সিয়ামকে হস্তান্তর করে।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা গণমাধ্যমকে জানান, ২০১৯ সালের ২৫ জুন বিকেল সাড়ে ৫টায় বাকলিয়া থানাধীন বাসার সামনে থেকে অপহরণের শিকার হয় প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. সিয়াম। এ ঘটনায় তার মা ইয়াছমিন বেগম বাকলিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। ঐ সময় অপহরণকারীরা ভুক্তভোগীর মাকে ফোন করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ৪০ হাজার টাকা দিতে রাজি হলে শিশুটিকে ফেরত দেওয়া হয়নি।
বাকলিয়া থানা পুলিশ অপহরণের সঙ্গে জড়িত মো. নাছির নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। সে অপহরণের কথা স্বীকার করলেও শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরে এ মামলার তদন্তভার যায় পিবিআইয়ের কাছে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার নাছির পিবিআইকে জানান, নাছির ও শিশুটির পরিবার বাকলিয়া থানাধীন একই কলোনিতে বসবাস করতেন। নাছির ঋণগ্রস্ত ছিলেন। সিয়ামকে মার্বেল কিনে দেওয়ার কথা বলে অপহরণ করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিপণ আদায় করে ঋণের টাকা পরিশোধ করা। অপহরণের পর সিয়ামকে ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় নিয়ে যায়। ঢাকায় নেয়ার পর সিয়ামকে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করেন নাছির। এক পর্যায়ে সিয়াম কৌশলে পালিয়ে যায়।
পরে সিয়াম দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন উত্তর পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল এলাকা সংলগ্ন আল আমিন রেস্টুরেন্টের সামনে গিয়ে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। তখন আল আমিন রেস্টুরেন্টের মালিক তাকে রেস্টুরেন্টের কাজে রাখে। রেস্টুরেন্টের মালিক শিশুটির কাছ থেকে বাবা-মায়ের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে তথ্য দিতে পারেনি।