সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

দেড় মাস আগেই আয়াতকে হত্যার পরিকল্পনা হয়

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১০৪ বার পঠিত

ভারতীয় সিরিয়াল ক্রাইম প্যাট্রল ও সিআইডি দেখে আয়াতকে খুনের ঘটনা রপ্ত করেন আবির। এরপর মক্তব্যে পড়তে যাওয়ার সময় আয়াতকে অপহরণ করেন। তারপরে গলাটিপে ও মুখে হিজাব পেঁচিয়ে আয়াতকে হত্যা করেন। পরে আয়াতের লাশটি মায়ের অজ্ঞাতে তার বাসায় লুকিয়ে রেখেছিলেন আবির। এরপর নিজেই আলিনার মা–বাবার সঙ্গে মিলে আলিনাকে খুঁজতে থাকেন। আবির এ হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন দেড় মাস আগেই।

শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে আবির মিয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সেখানেই আবির এসব কথা বলেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পরিদর্শক ইলিয়াস খান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আবিরকে আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে তিনি খুনের পরিকল্পনা ও হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দেন জবানবন্দিতে।

পিবিআই সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে আবির বলেন, দেড় মাস আগে আয়াতকে গুম করে তার পরিবারের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ নেয়ার পরিকল্পনা করেন আবির। এর আগেও তিনি কয়েকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বাসার আশপাশের লোকজন থাকায় কিছু করতে পারেননি।

 

গ্রেফতার আবির আলীআয়াতের জন্মের আগ থেকে তাদের বাসায় ভাড়া থাকেন আবিরের মা–বাবা। আয়াতকেকে তিনি নিজেও আদর করতেন। খুনের কারণ সম্পর্কে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করা আবির জবানবন্দিতে বলেন, মা–বাবার খারাপ সম্পর্ক, মায়ের চাকরি চলে যাওয়া, নিজে কিছু করতে না পারা এবং হঠাৎ বড়লোক হওয়ার ইচ্ছে থেকে তিনি এমনটা করেছেন। তিনি ২০ লাখ টাকা দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিনে ভাড়া দেবেন বলে চিন্তা করেন। তাই আয়াতকে খুন করে এ টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেন।

ভারতীয় সিরিয়াল ক্রাইম প্যাট্রল ও সিআইডি দেখে আয়াতকে খুনের ঘটনা রপ্ত করার কথা জবানবন্দিতে স্বীকার করেন আবির। তিনি বলেছেন, আয়াতকে ঘটনার দিন (১৫ নভেম্বর) মক্তব্যে পড়তে যাওয়ার সময় তাদের ভাড়া বাসায় (আবিরের বাবা ভাড়া থাকেন) নিয়ে যান। এরপর গলাটিপে ও মুখে হিজাব পেঁচিয়ে খুন করেন। পরে বাসার অন্যান্য মালামালের সঙ্গে একটি ব্যাগ ভর্তি করে আয়াতের লাশ পার্শ্ববর্তী আকমল আলী রোডে মায়ের ভাড়া বাসায় নিয়ে আসেন। এ সময় আরিবের মা বাসায় ছিলেন না।

গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আবিরের মা-বাবা আলাদা থাকছেন। আবির লাশটি মায়ের বাসায় শৌচাগারের ওপর জিনিসপত্র রাখার জায়গায় লুকিয়ে রাখেন। সন্ধ্যার পর তিনি আয়াতদের বাসায় গিয়ে তাকে খুঁজতে থাকেন। এরপর বাসায় ফিরে আয়াতকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে মা ও বোনকে আয়াতের বাসায় পাঠান। এরপর তিনি লাশটিকে ছয় টুকরা করে পলিথিনে ভরে রাখেন। পরদিন নগরের বন্দরটিলা বে টার্মিনাল সাইনবোর্ড এলাকায় ও আকমল আলী ঘাট স্লুইসগেট এলাকায় খণ্ডিত লাশ ফেলে দেন।

গত ৩০ নভেম্বর বন্দরটিলা আকমল আলী ঘাটসংলগ্ন স্লইসগেট এলাকা থেকে দুটি পা এবং পরদিন একই এলাকা থেকে আয়াতের মাথা উদ্ধার করে পিবিআই।

নগরের ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকায় আলিনাদের বাসা। তার বাবা সোহেল রানা। তিনি স্থানীয় একটি মুদিদোকানের মালিক। আয়াত নিখোঁজের ঘটনায় প্রথমে জিডি, পরে ইপিজেড থানায় মামলা করেন তার বাবা। ২৫ নভেম্বর আবিরকে গ্রেফতার করে পিবিআই। পরে তার মা, বাবা ও বোনকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলা তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পরিদর্শক মনোজ দে বলেন, জবানবন্দি দেওয়ার পর আদালতের নির্দেশে আবিরকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আয়াতের লাশের বাকি অংশটুকু উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com