বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::
সিলেট টেস্টে অনবদ্য ইনিংসে সুখবর পেলেন মুমিনুল ইসরাইল থেকে পুরস্কার পেয়ে ইউনেস্কোর বলে চালালেন ড. ইউনূস ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ কাল, যেভাবে জানবেন সাকিবের ফেরার টেস্টে নেই হাথুরুসিংহে ‘জনগণ থেকে যারা আউট হয়েছে, তারা ভারতবিরোধী স্লোগান দিচ্ছে’ চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে যুবকদের ধরে এনে টর্চারসেলে নির্যাতন স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা বয়েজ এন্ড গালর্স কলেজের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কালীগঞ্জে স্বাধীনতা দিবসে আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গাজীপুরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন কালীগঞ্জে চোরাকৃত স্বর্ণ ও ট্রাক ভর্তি সোয়ামিলসহ গ্রেফতার- ৩

পাকিস্তানি সেনাদের কুরআন পড়েই কবর দেয় ভারতীয় সেনারা

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০১৯
  • ২৭১ বার পঠিত

ধর্ম ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: ২০ বছর আগের কথা। অনেকেরই অজানা। ১৯৯৯ সালের মে-জুলাই মাস জুড়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর ইস্যুতে যুদ্ধ বেঁধে যায়। ইতিহাসে যেটি কার্গিল যুদ্ধ কিংবা কার্গিল সংঘর্ষ নামে পরিচিতি লাভ করে। সে যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর হাতে নিহত পাকিস্তানি সেনাদের কুরআন পড়েই কবরস্থ করা হয়েছিল। এমনই এক আবেগঘন খবর প্রকাশ পেয়েছে কলকাতা টুয়েন্টিফোরসেভেন-এ।

আড়াই মাস স্থায়ী হওয়া এ যুদ্ধে উভয় দেশের সেনারাই নিজ নিজ দেশের জন্য মরণপণ লড়াই করেছিল। কাশ্মীরের বরফঢাকা পাহাড়ের এক একটি দিন এক একটি ইতিহাস রচিত হয়েছিল। যদিও সেই ইতিহাস উভয় দেশের সেনাবাহিনীর রক্তের ও গর্বের।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তানি বাহিনী প্রথমেই সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে একটু একটু করে কাশ্মীর দখলে নেয়ার চেষ্টা করেছিল। তা বুঝতে পেরে ভারতীয় সেনারা পাকিস্তানি সেনাদের ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কার্গিল যুদ্ধের সে প্রতিরোধে ভারতীয় সেনাদের হাতে পাকিস্তানের ৪৫৩ জন সেনা সদস্য নিহত হয়। যা ১১ বছর পর পাকিস্তান স্বীকার করেছিল।

কাশ্মীরের ভারতীয় সীমান্তে পড়ে থাকা পাকিস্তানি সেনাদের মৃতদেহগুলো কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সম্মানের দাফন করেছিল ভারতীয় সেনারা। আর ভারতীয় সেনাদের মৃতদেহগুলো বিকৃত করে ফেরত দিয়েছিল পাকিস্তান।

১৯৯৯ সালের ১৪ মে ভারতীয় সেনাদের ৬ সদস্য সীমান্তে নজরদারি করছিল। সে সময় পাকিস্তানের অনুপ্রবেশকারীরা তাদের ৬ জনকেই হত্যা করে। হত্যার স্বীকার ৬ সদস্যকেই দেহ বিকৃত অবস্থায় পাকিস্তান ফেরত দিয়েছিল। চোখ, কান ও নাকহীন দেহগুলো ভারতবাসীকে কাঁদিয়েছিল। যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল ভারতীয় জনতা।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সে সময় পাকিস্তানের এঘুণ্য কাজের কোনো পাল্টা জবাব দেয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের এ ঘৃণ্য মনবতাবোধ বিবর্জিত ঘটনার বিপরীতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছিলেন যে, পাকিস্তানের মৃত সেনাদের দেহগুলো সম্মানের সঙ্গে দাফন করা হয়েছে। আর তাতে কুরআনও পাঠ করা হয়েছিল।

পাকিস্তানের ৪৫৩ জন সেনা সদস্য মৃত্যুবরণ করলেও তারা এ মর্মে অস্বীকার করেছিল যে, তাদের কোনো সেনা হতাহত হয়নি। আর সেনা সদস্যদের মৃতদেহগুলো গ্রহণ করেনি। যা ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্মানের সঙ্গে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সে সময় দাফন করেছিল।

পাকিস্তানি সেনারদের মৃতদেহগুলো কবর দেয়ার আগে ভারতীয় সেনারা পাকিস্তানের পতাকা দিয়ে তাদের দেহগুলো মুড়ে দিয়েছিল। ভারতীয় সেনারা ওই এলাকায় তাদের দাফন-কাফনের জন্য ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদেরও সন্ধান করেছিল। পরে ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব না পাওয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুসলিম সদস্যরাই পাকিস্তানের মৃত সেনা সদস্যদের দাফন করেছিল। দাফনের পর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কুরআন তেলাওয়াত করেছিল। দেখিয়েছিল মানবতা ও সর্বোচ্চ সম্মান।

তৎকালীন সময়ে ভারত সরকার ও সেনাবাহিনীর বিচক্ষণতায় ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতি, কাশ্মীরের মুজাহিদিনদের উপস্থিতি সত্ত্বেও ভারতীয়দের মধ্যে কোনো সাম্প্রদায়িক বিরোধিতা তৈরি হয়নি। সে সময়েও ভারতীয় শিবিরের মুসলিম সেনারা নিহত হয়েছিল। আর তাতে পাকিস্তান বিরোধী আবেগ তৈরি হয়েছিল।

কার্গিল যুদ্ধে নিহত উভয় দেশের সেনাদেরই সম্মান জানিয়েছিল ভারত। বিশেষ করে পাকিস্তানি মুসলিম সেনাদের কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে দাফন করার পাশাপাশি ভারতীয় মুসলিম সেনাদের জানিয়েছিল সর্বোচ্চ সম্মান। নিহত সদস্যদের গ্রামে গ্রামে শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানিয়েছিল ভারতের সব হিন্দু পরিবার।

আরও পড়কুন > মোমিনপুরে হিন্দু ব্যক্তির সৎকার করলেন মসজিদের ইমাম!

উল্লেখ্য যে, বর্তমানে কার্গিল যুদ্ধের ২০ বছর পর ভারতজুড়ে মুসলিম নির্যাতন এক মহামারী আকার ধারণ করেছে। যারা মুসলিম নির্যাতন বন্ধের জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে তারাও আক্রমণ ও মামলার শিকারে পরিণত হয়েছে। বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় এ কথা নিঃসংকোচে বলা যায় যে, আজ ভারতের মুসলিম হত্যা ও নির্যাতন সে (কার্গিল যুদ্ধ পরবর্তী) সময়ের ভারতের সব হিন্দু-মুসলিমদের আবেগ ও সম্মানের পরিপন্থী ও তা অসম্মানেরই শামিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com