নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা ও সাজা প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে বিক্ষোভ মিছিলটি নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারও কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
মিছিল শেষে এক পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী বলেন, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাভোগের আজ ৭৩০ দিন। তিনি দেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও সাবেক সেনাপ্রধান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিনী। দেশে গণতন্ত্র যখনই সংকটাপন্ন হয়েছে, মানুষের বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা যখনই পিষ্ট হয়েছে, তখনই খালেদা জিয়ার সুযোগ্য নেতৃত্বে গণতন্ত্র প্রাণ ফিরে পেয়েছে। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি ‘আপোষহীন নেত্রী’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। দেশের মানুষের কাছে স্মরণকালের জনপ্রিয় এই নেত্রী একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকে অত্যন্ত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করেছেন। অথচ এই মহিয়সী নারী বিনা অপরাধে মিথ্যা মামলায় শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে আজ ৭৩০ দিন কারাজীবন অতিবাহিত করছেন।
তিনি বলেন, ক্ষমতার দম্ভে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী রাষ্ট্র পরিচালনায় সর্বক্ষেত্রে ‘ধরাকে সরা জ্ঞান’ করছে। শুধু ধরাকে সরা জ্ঞান নয়, দেশ পরিণত হয়েছে হীরক রাজার দেশে। হীরক রাজার দেশের মতোই বাংলাদেশের মন্ত্রী-নেতাদের উদ্ভট, অসামঞ্জস্য ও লাগামহীন কথাবার্তা এবং আচরণে দেশবাসী এখন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে বিচার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কব্জায় নিয়ে দেশে নব্য বাকশালী শাসন কায়েম করা হয়েছে। ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করে দেশকে এক ভয়াল নগরী বানানো হয়েছে। আওয়ামী প্রতিহিংসার রাজনীতির বেড়াজালে দেশ ও দেশের মানুষ এখন কাতরাচ্ছে।
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা দিনকে দিন চরম অবনতি হতে থাকলেও প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকারের ক্রোধের আগুন যেন নিভছেই না। শেখ হাসিনা জনগণের আন্দোলন-সংগ্রামকে স্তব্ধ করতেই খালেদা জিয়াকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে চান। তিনি হয়তো ভেবেছেন, জনগণ নয়, ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে জনগণ ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালালেই তার ক্ষমতা কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, আমি আবারও অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাকে তার পছন্দের হাসপাতালে সুচিকিৎসার সুযোগ দানের দাবি জানাচ্ছি। কারাবন্দী সকল নেতাকর্মীরও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
মিছিলে তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সদস্য সচিব হাজী মজিবুর রহমান, জাসাস কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম রিপন, ছাত্রদলের সাবেক নেতা আহসান উদ্দিন খান শিপন, শেখ আব্দুল হালিম খোকন, মেহবুব মাসুম শান্ত, কে এম রেজাউল করিম রাজু, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওসার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নেওয়াজ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রনিসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।