অনলাইন ডেস্ক: হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ করে থাকে লাখ লাখ মুসলমান। কিন্তু চলতি বছরের চিত্রটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। অথচ মঙ্গলবার কাবাচত্বরে ছিলেন না কোনো হাজি। কেবল পরিচ্ছন্ন কর্মীরা শেষ মুহূর্তের ধোয়ামোছার কাজ করছিলেন।
গত বছর হজ করেছিলেন ২৫ লাখ মুসলমান। করোনার কারণে চলতি বছর হজের অনুমতি পেয়েছেন এক থেকে ১০ হাজার ব্যক্তি। তাও এর কেউ বিদেশি নন, সবাই সৌদির বাসিন্দা। এই স্বল্প সংখ্যক হাজিকে বারবার করোনা শনাক্ত পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। হজ চলাকালে মক্কার হোটেলগুলোতে তারা থাকবেন আইসোলেশনে।
সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের মুখ্য পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমর আল মাদ্দাহ জানান, হাজিদের জন্য থার্মাল স্ক্যানার বসানো ও ইলেকট্রনিক পরিচয় পত্রের মতো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে পুরো হজপ্রক্রিয়া শেষ করতে প্রযুক্তিই আমাদের কালো ঘোড়া। কোভিড-১৯ সংক্রমণের কোনো ঘটনা এবং এতে মৃত্যু ছাড়াই যাতে হজ শেষ হয় তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
মক্কায় প্রবেশের আগেই হাজিদের হাতে পরার জন্য ব্যান্ড সরবরাহ করেছে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই ব্যান্ডের মাধ্যমে হাজিদের চলাফেরা পর্যবেক্ষণ এবং বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকা নজরদারি করা যাবে। হাজিদের শারীরিক তাপমাত্রা পরীক্ষার জন্য কাবাঘরের আশেপাশের সব জায়গায় থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়েছে।
এবার হাজিদের ২০ জনের গ্রুপ করা হয়েছে। হজের আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য দলনেতা হাজিদের নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে নির্দিষ্ট সময়ে নিয়ে যাবেন। কোথাও যাতে ভিড় না হয় সেজন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
হজের ফরজ আহকামগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে আরাফার ময়দানে অবস্থান। আরাফায় হাজিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে উচ্চপ্রযুক্তির পরিচয় পত্র সরবরাহ করা হয়েছে। অ্যাপসের মাধ্যমে এই পরিচয় পত্রটির সঙ্গে হাজিদের ফোনে সংযোগ থাকবে। অ্যাপস ও পরিচয় পত্রের মাধ্যমে দলছুট হাজিকে শনাক্ত করে তার দলের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা যাবে এবং হাজির কোনো বিশেষ খাবারের চাহিদা থাকলে সেই অনুরোধও করা যাবে। এই কার্ডে হাজিদের ব্যক্তিগত তথ্য, স্বাস্থ্যের অবস্থা, আবাসস্থান ও অন্যান্য তথ্য থাকবে।
হাজিদের ইহরামের কাপড়ে সিলভার ন্যানো টেকনোলজি যুক্ত করা হয়েছে। এটি কাপড়ের ব্যাক্টেরিয়াকে মেরে ফেলতে সাহায্য করবে এবং কাপড়কে পানিনিরোধক করবে।
হজ করতে এক জন মুসলমানকে কয়েক হাজার ডলার ব্যয় করতে হয়। তবে এবার হাজিদের খাবার, আবাসন, যাতায়াত ও স্বাস্থ্যসেবার পুরো খরচ দিচ্ছে সৌদি সরকার।