আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হাইতির প্রধানমন্ত্রী অ্যারিয়েল হেনরির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়িজকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ফলে তদন্ত চলাকালীন তিনি যেন দেশ থেকে অন্য কোথাও যেতে না পারেন সেজন্যই এই নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী হেনরির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের আবেদন জানিয়েছেন দেশটির এক প্রসিকিউটর। প্রেসিডেন্ট ময়িজ হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন জোসেফ ফেলিক্স বাদিওর সঙ্গে হেনরির সম্পৃক্ততার বিষয়ে তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ময়িজের হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা পর জোসেফের সঙ্গে বেশ কয়েকবার ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী হেনরি। ফলে এই হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা ছিল অভিযোগ উঠেছে।
গত ৭ জুলাই ময়িজকে নিজ বাড়িতে হত্যা করা হয়। আততায়ীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে তাকে গুলি করে হত্যা করে।
সশস্ত্র একটি দল প্রেসিডেন্ট জোভেনেলের বাড়িতে মাঝ রাতে হামলা চালায়। দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন তার স্ত্রী মার্টিন ময়িজও। আর এ হত্যা মিশনে অংশ নেয় ২৮ জন বিদেশি ঘাতক। ৫৩ বছর বয়সী জোভেনেল ময়িজ ক্ষমতায় আসেন ২০১৭ সালে।
হাইতি পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের স্বাধীন দ্বীপরাষ্ট্র। এর সরকারি নাম হাইতি প্রজাতন্ত্র। ক্যারিবীয় সাগরের হিস্পানিওলা দ্বীপের পশ্চিম এক-তৃতীয়াংশ এলাকা নিয়ে রাষ্ট্রটি গঠিত। দ্বীপের বাকি অংশে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র অবস্থিত।
দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ইতিহাস দীর্ঘ। বেশ কয়েকজন স্বৈরশাসক দেশটি শাসন করেছেন। এদের মধ্যে ফ্রঁসোয়া দুভালিয়ে-র নাম উল্লেখযোগ্য। ২১০০ শতকের শুরুতে এসে হাইতি একটি গ্রহণযোগ্য সরকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের চেষ্টা করছে।
১৮০৪ সালে হাইতি লাতিন আমেরিকার প্রথম স্বাধীন দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়। এটিই দাসদের সফল বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট একমাত্র রাষ্ট্র। হাইতি প্রথমে স্পেনীয় ও পরে ফরাসি উপনিবেশ ছিল। হাইতির সংখ্যাগরিষ্ঠ আফ্রিকান দাসেরা ফরাসি ঔপনিবেশিকদের উৎখাত করলে হাইতি স্বাধীনতা লাভ করে। পর্তোপ্রাস দেশটির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।