লক্ষ্মীপুরে প্রায় সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের শীতকালিন সবজির চাষাবাদ হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় তিনশ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে ফুলকপি। ফুলকপি চাষে হাসি ফুটেছে লক্ষ্মীপুরের কৃষকদের। উৎপাদিত এসব ফুলকপির বাজার মূল্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এমনটিই জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকতারা জানান, অনুকূল আবহাওয়া, সময়মত বীজ বোপণ ও সুষম সারের ব্যবহারের ফলে এবার লক্ষ্মীপুরে ফুলকপির বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের প্রতিটি ক্ষেতে এখন সারি সারি ভাবে রয়েছে পরিপক্ক কপি। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত এসব কপি এখন বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছে। বাজার দরও পাচ্ছে ভালো। এতে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। অল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় ফুলকপি চাষ করে চিন্তামুক্ত তারা। এসব এলাকায় খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ফুলকপি চাষ। এখানকার উৎপাদিত ফুলকপি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
জেলার দক্ষিণাঞ্চলের রামগতি ও কমলনগর সবচেয়ে বেশি ফুলকপি চাষ হয়েছে। চাষ হয়েছে সদরের বিস্তীর্ণ এলাকায়। বিশেষ করে সদরের ভবানীগঞ্জ, চরউভুতী, পেয়ারাপুর, টুমচরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় ফুলকপি।
এদিকে, কমলনগরের হাজিরহাট এলাকার বিভিন্ন স্থান, চর কালকিনি, সাহেবেরহাট, চর লরেন্স,চর মার্টিন, চর ফলকন,পাটারীরহাট ও চর কাদিরারা ফুলকপি চাষ হয়। এছাড়া রামগতির চর বাদাম, চর পোড়াগাছা, চর আবদুল্যাহ, চর আলগী, চর রমিজ, বড়খেড়ী এবং চর গাজী এলকার বিভিন্ন স্থানে চাষ হয় ফুলকপির।
কৃষকরা জানান, একটি ফুলকপি উৎপাদন করতে তাদের গড় খরচ হয় নয় থেকে ১০টাকা। বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় উৎপাদিত ফুলকপি প্রকার ভেদে বিক্রি করে পাচ্ছেন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। শীতকালিন সবজি ফুলকপি আবাদ করে ভালো লাভ হওয়ায় এখানকার কৃষকরা ফুলকপিসহ শীতকালিন সবজি চাষে ক্রমেই আগ্রহী হয়ে উঠছে।
স্থানীয় সবজি চাষিরা জানান, ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায় না। ফলে সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। সফলও হয়েছেন। তবে লক্ষ্মীপুর জেলায় কাঁচামাল সংরক্ষণের সরকারি-বেসরকারি কোনো হিমাগার নেই। ফলে এসব সবজি সংরক্ষণ করতে তাদের বিপাকে পড়তে হয় তাদের। হিমাগার থাকলে তারা আরো বেশি সুফল পেতেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো জেলার বিভিন্ন স্থানে শাক সবজি চাষ হয়েছে। তবে অন্যান্য সবজির তুলনায় ফুলকপি ভালো ফলন হয়েছে। এতে কৃষকরা বেজায় খুশি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে এসব কৃষকদের যথাসময়ে সার বীজ দেওয়া হয়েছে।
তারা নিয়মানুযায়ী চাষাবাদ করায় দ্রুত ফলন হয়েছে। বর্তমানে তারা ফুলকপি ক্ষেত থেকে কেটে বাজারে তুলছে এবং ভালো দামে বিক্রি করছে। এবার শীত মৌসুমে ফুলকপির বাজার ভালো। উৎপাদিত ফুলকপির আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা হবে বলে ধারণা করছি।