জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণকাজের সার্বিক অগ্রগতি ৫৮ ভাগ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি। টানেলের নির্মাণকাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে এ সভা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা সরকার চট্টগ্রামকে দেশের অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহে রুপান্তরের যে অবিরাম প্রয়াস তারই ধারাবাহিকতায় গ্রহণ করে কর্নফুলীর তুলদেশ দিয়ে টানের নির্মাণের উদ্যোগ। সরকার এরই মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চট্টগ্রামকে ঘিরে।
‘এরই মধ্যে নদীর তলদেশ দিয়ে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ দুটি টিউবের মধ্যে একটি খনন ও রিং স্থাপন কাজ শেষ হয়েছে। আরেকটি টিউবের খনন কাজ আমরা আশা করছি, নভেম্বর মাসে শুরু করা যাবে। গতকাল পর্যন্ত টানেলের সার্বিক অগ্রগতি প্রায় ৫৮ ভাগ। ’
সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে অর্থাৎ মার্চ থেকে সেপ্টেমম্বরে প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে অগ্রগতি হয় শতকরা ৫ ভাগ। প্রায় দশ হাজার চারশ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ টানেল চীনের সাথে জি-টু-জি ভিত্তিতে নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে চীনা-সহায়তা প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা। ইতিমধ্যে দুই প্রান্তের ভায়াডাক্ট নির্মাণ কাজও এগিয়ে চলেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চীনের একটি প্রতিষ্ঠান।
‘করোনা সংকটের শুরুতে প্রায় ৩০০ চীনা নাগরিক ছুটিতে নিজ দেশে অবস্থান করছিলো। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে তারা বাংলাদেশে ফিরে আসে এবং কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ড শেষ করে কাজে যোগ দেয়। করোনাকালের প্রথমদিকে সীমিত পর্যায়ে কাজ চললেও টানেলের খনন কাজ বন্ধ হয়নি। প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যল্পে এগিয়ে গেছে খনন কাজ। এখন পুরোদমে কাজ চলছে। ’
অতিরিক্ত কাজ করে পিছিয়ে পড়া কাজ কাভার করুন, প্রয়োজনে দিনরাত কাজ করে হলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার আহ্বান জানান সেতুমন্ত্রী।
টানেলের দুই প্রান্তের সংযোগ সড়কের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে নির্দেশা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মনে রাখতে হবে, যারা ক্ষতিগ্রস্ত বা যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তাদের ক্ষতিপূরণের অর্থ পেতে যেন কোনরূপ ভোগান্তি না হয়। টানেল নির্মাণ প্রকল্পের একটি ব্যতিক্রমী দিক হলো, শহরের একপ্রান্তে হওয়ায় অধ্যায় নির্মাণকাজে কোনরূপ জনভোগান্তি নেই। তবে নির্মাণকালে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই কাজ করতে হবে। পাশাপাশি মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের কাজ শেষ হলে বদলে যাবে চিরচেনা চট্টগ্রাম-এই আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, নদী, পাহাড় আর সাগর মোহনার চট্টগ্রাম পাবে নবরূপ। নদীর ওপাড়ে গড়ে উঠবে আরেক চট্টগ্রাম। ব্যবসা বাণিজ্যসহ আবাসন ব্যবস্থা সম্প্রসারিত হবে। চীনের সাংহাই নগরীর মতো চট্টগ্রাম হবে ওয়ান সিটি টু টাউন।