গত একমাস ধরে দেশের ব্যাংকিং খাতে আন্তঃব্যাংক লেনদেন সুদের হার (কলমানি রেট) ২ শতাংশের নিচে রয়েছে। মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অতিরিক্ত তারল্য সরবরাহ করায় এবং ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় এই অবস্থার তৈরি হয়েছে
বিশ্লেষকরা বলছেন, অতিরিক্ত তারল্য সরবরাহের কারণে ব্যাংকগুলো মুনাফা ধরে রাখতে আমানতের সুদহার কমিয়ে এনেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে ২০১৮ সালের ৯ আগস্টের পরে চলতি বছরের ৫ নভেম্বর গড় কলমানি রেট ১ দশমিক ৯২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল।
পরবর্তীতে কলমানি রেট ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত আবার ২শতাংশে ফিরে গেলেও ১৫নভেম্বর আবার ১ দশমিক ৮৪শতাংশে নেমে আসে এবং এখন পর্যন্ত ২ শতাংশের নিচেই রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সুদহার সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ২৫শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ১শতাংশের মধ্যে দাঁড়িয়েছে।
চলতি বছরের ১৫ নভেম্বর হতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলো দৈনিক কলমানি মার্কেট থেকে ৩হাজার ৬শ কোটি থেকে ৫হাজার ৩শ কোটি টাকা পর্যন্ত ধার করেছে। আগস্ট মাসে দৈনিক ব্যাংকগুলো কলমানি মার্কেট থেকে ধার নিয়েছে ৭ হাজার কোটি থেকে ৯ হাজার ২শ কোটি টাকা পর্যন্ত।
ব্যাংকাররা বলেছেন, মার্চ মাসে করোন ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরে ব্যবসায়ীদের তহবিলের চাহিদা কম ছিল, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে।
এই সময়ে দেশের ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ হওয়ার কারণে ঋণের চাহিদাও কমে গিয়েছিল। দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসায় রপ্তানি বাণিজ্যে ধস নামাই ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বেসরকারিখাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ৮শতাংশ ধরা হলেও অক্টোবর শেষে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে ৮দশমিক ৬১শতাংশে নেমে এসেছে।
বেসরকারি খাতে অর্থের চাহিদা কমার পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত থেকে সরকার চলতি ২০২০-২০১২ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার ৮৮ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা নেয়নি।
লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত সরকার ব্যাংকিংখাত থেকে ২৯৫০ কোটি ৪৯লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকার ব্যাংকিংখাত থেকে ৮৫হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে।