শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মৃতের সংখ্যা ও আক্রান্ত বাড়ছে

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৭ জুলাই, ২০২১
  • ১৪৪ বার পঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গত কয়েকদিন ধরে বেড়েই চলছে। করোনা পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী আক্রান্তের শতকার হারও বেশি। একই সঙ্গে দীর্ঘ বিরতির পর করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবরও পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেই তুলনায় জেলার নির্ধারিত আইসোলেশন সেন্টারগুলোতে রোগী ভর্তির সংখ্যা খুবই কম। গুরুতর অসুস্থ অনেকে নিজ উদ্যোগে ঢাকায় চলে যাচ্ছেন। আবার অনেকের করোনার লক্ষণ থাকলেও পরীক্ষা করাতে চাচ্ছেন না।

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পাওয়া হিসেব মতে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় মোট ২১৪ জনকে আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা আছে। তবে এখন শুধুমাত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ২১ জন ভর্তি আছে। ১০০ শয্যার আইসোলেশনের ব্যবস্থা থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিক্যাল কলেজটির ওই শয্যাগুলো কোয়ারেন্টিনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। উপজেলা সদরের হাসপাতালগুলোতে আইসোলেশনের ব্যবস্থা থাকলেও কোনো রোগী ভর্তি নেই।

এদিকে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য মতে, গত কয়েকদিন ধরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। আক্রান্তের হারও বেশি। সর্বশেষ সোমবার আসা ফলাফলে ১৫৮ জনের রিপোর্টে ৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আগের দিন ৩১০ জনের রিপোর্টে ৭০ জন, ২ জুলাই ৯৩ জনের রিপোর্টে ১৮, ১ জুলাই ৪০৬ জনের রিপোর্টে ৭৭ জনের করোনা পজেটিভ হয়।

অপরদিকে সব মিলিয়ে জেলায় ৩৮ হাজার ৮৫৩ জনের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৩৮ হাজার ৭১৬ জনের রিপোর্টে চার হাজার ৩৮০ জনের জনের করোনা পজেটিভ হয়। মারা গেছেন ৬৬ জন। সোমবার সকাল নাগাদ আইসোলেশনে আছেন ২১ জন।

জেলায় মোট ২১টি আইসোলেশন শয্যার মধ্যে সদর জেনারেল হাসপাতালে ৫০টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিক্যাল কলেজে ১০০টি ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো বাকি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এখন শুধু জেনারেল হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হতে থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ঘাটতি রয়েছে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন কাজ এখনও শেষ হয়নি। রোগীদের উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন সরবরাহের জন্য হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলাও নেই। এছাড়া আক্রান্ত রোগীর ফুসফুস কত শতাংশ পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছে, সেটি জানার জন্য সিটি স্ক্যান ও পোর্টেবল এক্স-রে সুবিধাও নেই জেনারেল হাসপাতালটিতে। এর ফলে আক্রান্ত রোগীদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাদেরকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই কর্তৃপক্ষের।

পর্যাপ্ত চিকিৎসা সম্ভব নয় চিন্তা করেই সোমবার সকালে করোনা আক্রান্ত স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তি। এ সময় গণমাধ্যম কর্মীদেরকে তিনি জানান, রবিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হলেও সন্ধ্যা নাগাদ অক্সিজেনের কোনো সাপোর্ট পাননি। এ কারণে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি ঢাকায় চলে যাচ্ছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান ডা. মো. আবু সাঈদ সোমবার রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার এখানে এখন ১০০ জনের জন্য শুধু ভারত ফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা আছে। একসাথে দু’টা চালানো সম্ভব নয়। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় আবার এটাকে আইসোলেশন সেন্টার করা যেতে পারে।’

জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলতি মাসেই শেষ হবে। তখন হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ব্যবহার করা যাবে। আপাতত ম্যানিফোল্ড পদ্ধতিতে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ জানান, করোনা রোগী বেড়ে গেলে আইসোলেশনের শয্যা সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে। তিনি জানান, খুব কম সংখ্যক রোগীর আইসিইউ ও হাই ফ্লো অক্সিজেন লাগে। জেলা সদর ও উপজেলা হাসপাতালে তিনটি করে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com