সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

বিভিন্ন জেলায় হাজারো প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টিনে

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০
  • ২৪৯ বার পঠিত

 

অনলাইন ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিদেশফেরত হাজারো মানুষকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। গত কয়েক দিনে দেশের ২০ জেলার প্রায় পাঁচ হাজার জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনার পাশাপাশি বেপরোয়া ঘোরাফেরা করায় কারও কারও জরিমানা করেছে প্রশাসন। আমাদের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭৯ জনসহ মোট ৩৮৮ জন বিদেশফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডাক্তার এবিএম মশিউল আলম এ তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, বিদেশফেরত যেসব ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে।

গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জে বিদেশফেরত ১৭৭ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন শেষ হয়েছে ৭ জনের। জেলার সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ এ তথ্য জানান।

ঝালকাঠি: ঝালকাঠিতে শনিবার (২১ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত ১১২ জন হোম কোয়েরেন্টিনে আছেন। নির্ধারিত ১৪ দিন মেয়াদ শেষ হওয়ায় ৯ প্রবাসীকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা না মেনে হোম কোয়ারেন্টিনে না থেকে বাইরে চলাফেরা করায় ৬ জনকে মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জয়পুরহাট: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত ২৪ ঘণ্টায় জয়পুরহাটে আরও ৬ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে গত কয়েকদিনে মোট ৭০ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। এদের মধ্যে ৯ জনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আর আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ইউনিটে এক বৃদ্ধকে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে ৬০ জন অবস্থান করছেন। সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিঞা এসব তথ্য জানান।

খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়িতে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বিদেশফেরত নাগরিকদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা কাজ করছেন। শনিবার (২১ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত বিদেশফেরত ৫৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এছাড়া বাকিদের খুঁজে বের করে তাদের কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনতে কাজ চলছে। সিভিল সার্জন ডা. নুপুর কান্তি দাশ এ তথ্য জানান।

এদিকে, করোনা পরিস্থিতিকে পুঁজি করে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি ও মজুত করার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে প্রশাসন। খাগড়াছড়ি সদর ও মাটিরাঙা উপজেলায় গত দুদিনে অবৈধভাবে চাল মজুত করার অপরাধে চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালার পাশাপাশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড ও সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ বিক্রির দায়ে এক চিকিৎসককে অর্থদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মেহেরপুর

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন জানান, জেলায় এ পর্যন্ত ১১৫ প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে সংখ্যা। এদের মধ্যে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬৪ জন, মেহেরপুর সদর হাসপাতালে ৩০ জন এবং মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধানে ২৩ জন আছে। এছাড়া ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা কোয়ারেন্টিনের বাইরে রয়েছেন ছয় জন।

মেহেরপুরের তিন উপজেলায় সম্প্রতি ১২শ’ জন প্রবাসী বিভিন্ন দেশ থেকে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক আতাউল গনি। তিনি বলেন, ‘এদের মধ্যে প্রায় দুইশ প্রবাসী সরাসরি মেহেরপুরে না ফিরে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে আত্মীয়ের বাড়িতে আছেন। তাদের খোঁজা হচ্ছে।

সিলেট বিভাগে হোম কোয়ারেন্টিনে ১৪৪৪ জন

সিলেট বিভাগে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা প্রবাসীদের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। ইতোমধ্যে এই সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সিলেটে নতুন করে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ২২৭ জন। বর্তমানে সিলেট বিভাগের চার জেলায় ১৪৪৪ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। শনিবার (২১ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিছুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘যারা হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন তারা সবাই প্রবাসী ও তাদের স্বজন। তাদের বিষয়ে সবসময় খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। এছাড়া সবাইকে সরকারের নির্দেশনা মানার পাশাপাশি সচেতন হয়ে চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সিলেট জেলায় কোয়ারেন্টিনে আছেন ৭৪৮ জন। সুনামগঞ্জে ১৩৭ জন, হবিগঞ্জে ২১৬ জন ও মৌলভীবাজারে ৩৪৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে দুজন সিলেটের শহীদ ডা. শামসুদ্দিন হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে রয়েছেন।

নওগাঁ: করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব রোধে নওগাঁয় ২৪৩ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জন আখতারুজ্জামান বলেন, ‘গত কয়েকদিনে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ২৪৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। তাদের মধ্যে ৩৯ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ২০৪ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। সব সময় তাদের দেখভাল করা হচ্ছে। তাদের বাইরে ঘোরাফেরা না করে বাড়িতে অবস্থানের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ১৪ দিনের মধ্যে যদি তাদের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা না দেয়, তাহলে তাদের স্বাভাবিক চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।’

এছাড়াও নওগাঁর ধামইরহাটে একজন, সদরে একজন ও পত্নতলায় তিন জনসহ মোট পাঁচজনকে হোম কোয়ারেন্টিন থেকে বের হওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের এক থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করেছেন।

নেত্রকোনা: নেত্রকোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় বিদেশফেরত আরও ২২ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন তাজুল ইসলাম জানান, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার সংখ্যা বেড়ে ৮১ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ৮০৭ জনের তালিকা পেয়ে বাকিদের খুঁজে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে প্রশাসন।নেত্রকোনায় হোম কোয়ারেন্টিন না মানায় একজনের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

নোয়াখালী: নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এর আগে কোয়ারেন্টিনে ছিল ১৯৪ জন। নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ড. মমিনুর রহমান এ তথ্য জানান।

কুমিল্লা: গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৪ জনসহ কুমিল্লায় মোট ৯১৭ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশ প্রবাসী। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বিভিন্ন দেশ থেকে তারা দেশে এসেছেন। কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘গত ১ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ১৪ হাজার জন প্রবাসী বিভিন্ন দেশ থেকে কুমিল্লায় এসেছেন।’

খুলনা: খুলনায় বিদেশফেরত আরও ৬৫ জনকে হোম কেয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শেষ খবর পর্যন্ত খুলনায় ২৬৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, ‘খুলনার উপজেলাগুলোতে শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত আরও ৬৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দাকোপে ১১ জন, বটিয়াঘাটায় চার জন, রূপসায় চার জন, তেরখাদায় দুজন, ফুলতলায় তিন জন, পাইকগাছায় ২০ জন, কয়রায় ২১ জন রয়েছেন। আর এ পর্যন্ত খুলনায় হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে ২৬৩ জনকে। এর মধ্যে রয়েছে দাকোপে ৩৯ জন, বটিয়াঘাটায় ১৩ জন, রূপসায় ৩৯ জন, তেরখাদায় ১০ জন, দিঘলিয়ায় তিন জন, ফুলতলায় ১১ জন, ডুমুরিয়ায় চার জন, পাইকগাছায় ৫৬ জন, কয়রায় ৪৮ জন ও কেসিসিতে ৪০ জন।

জয়পুরহাট: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত ২৪ ঘণ্টায় জয়পুরহাটে আরও ৬ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে গত কয়েকদিনে মোট ৭০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। এদের মধ্যে ৯ জনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আর আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ইউনিটে এক বৃদ্ধকে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে ৬০ জন অবস্থান করছেন। সিভিল সার্জন ড. সেলিম মিঞা এসব তথ্য জানান।

নীলফামারী:নীলফামারীতে গত ২৪ ঘণ্টায় বিদেশফেরত ৩২ জন হোম কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ১২০ জন। তাদের মধ্যে উত্তর ইপিজেডের বিভিন্ন কারখানার চীনা নাগরিক রয়েছেন ১৭ জন। উত্তরা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মো. এনামুল হক এ তথ্য জানান।

শনিবার (২১ মার্চ) দুপুরে সিভিল সার্জন ডা. রনজিৎ কুমার বর্মণ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বিদেশফেরতদের মধ্যে নতুন করে আরও ৩২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। জেলায় বর্তমানে ১২০ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।

অপরদিকে, জেলায় ৪০ জনের হোম কোয়ারেন্টিন সম্পন্ন হয়েছে। তারা সবাই স্বাভাবিক চলাফেরা করছেন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, জেলা সদরে ২৬, ডোমারে ২৪, ডিমলায় ২৬, জলঢাকায় ২০, কিশোরীগঞ্জে ১০ ও সৈয়দপুর উপজেলায় ১৪ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে।

নরসিংদী: নরসিংদীতে বিদেশ থেকে আসা ৪০৯৩ জনের মধ্যে ১৫৭ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন এ তথ্য জানান।

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে চীন, ইতালি, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত ২৮৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। আরও ৪০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিন থেকে মুক্ত করা হয়েছে। গত তিন মাসে পাঁচ হাজার দুইশ’র ওপরে প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান এ তথ্য জানান।

যশোর: যশোরে ৩২৩ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তবে, কেউ আইসোলেশনে নেই। আর বিদেশ থেকে গত ১৭ দিনে যশোরের ঠিকানা ব্যবহার করে দেশে ফিরেছেন প্রায় ২২ হাজার জন। এছাড়া কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২১ মার্চ) দুপুরে যশোর সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ লক্ষ্যে গঠিত জেলা কমিটির সভা শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শফিউল আরিফ এ তথ্য জানান।

এছাড়া ফেনীতে ১৪৫০ জন, কুষ্টিয়ায় ১০১ জন, বান্দরবানে ৬ জনসহ বিভিন্ন জেলায় প্রবাসী ও তাদের স্বজনদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com