লাইফস্টাইল ডেস্ক : বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ব্রণ, সূর্যের তাপ বা রোদ থেকে দাগ ত্বকের চিরশত্রু। মূলত সূর্যের রোদ থেকেই দাগছোপের সমস্যাটা শুরু হয়। জীবনে চলার পথে রোদকে তো আর সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। সেজন্য মুখে ব্রণ বা কোনো ক্ষত থেকে বিশ্রী দাগ হতে পারে। ত্বকে দাগছোপ হবেই। এটা সম্পূর্ণ আটকানো সম্ভব নয়। তবে, দাগ যাতে মুখে না বসে যায় সে চেষ্টাটা করতে হবে।
দাগ থেকে মুক্তি পেতে খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না। রান্নাঘরেই আছে সব উপাদান। আপাতত পাঁচটি উপকরণে ভরসা রাখতে পারেন দাগ দূর করতে। প্রথমদিকে পছন্দমতো একটা বা দুইটা উপাদান ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এতে যে রাতারাতি দাগ চলে যাবে, এমনটা নয়। ধৈর্য নিয়ে নিয়মিত দাগছোপের উপর এই উপকরণগুলো লাগাতে থাকুন। তাহলে জেনে নেওয়া যাক খুবই পরিচিত উপাদানগুলোর উপকারিতা সম্পর্কে-
আলু: আলু চেনেন না এমন মানুষ দুনিয়াতে আছে কিনা সন্দেহ! মুখের দাগ দূর করতে আলু কিন্তু ভীষণ কার্যকরী। হাইপারপিগমেন্টেশন বা মেছতার সমস্যা থাকলে আলু ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আলুতে আছে ক্যাটেকোলেজ নামক এক ধরনের উপাদান, যা ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। আলুর খোসা ছাড়িয়ে খানিকটা মোটা করে স্লাইস করে কেটে নিন। একটা স্লাইসের উপর কয়েক ফোঁটা পানি দিয়ে তা ত্বকে সার্কুলার মোশনে ঘষুন। ৫ থেকে ১০ বার ঘষার পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। প্রতিদিন দুই বেলা করতে পারেন। খুব ভালো হয় যদি এর সঙ্গে লেবুর রস ব্যবহার করেন। আলু কুড়িয়ে নিয়ে তাতে লেবুর রস মিশিয়ে মাস্ক হিসেবে মুখে লাগিয়ে রাখুন। আধঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন।
কমলার খোসা: ভিটামিন সি ত্বকের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। কমলাতে সাইট্রিক অ্যাসিডের পাশাপাশি ভিটামিন সিও থাকে। আর কমলার খোসা স্ক্রাব হিসাবে খুব ভালো। কমলার খোসা রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন। এর সঙ্গে সামান্য লেবুর রস, দুধ এবং মধু মিশিয়ে স্ক্রাব হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। হালকা হাতে মুখের দাগ থাকা স্থানে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এই মিশ্রণ প্রতিদিন ব্যবহার করলে দাগ দূর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বক কোমল হবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা আরো বাড়বে।
লেবু: ত্বকের দাগ নিয়ে যারা চিন্তিত, তারা লেবুকে কাজে লাগাতে পারেন। লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড, ব্লিচিং প্রপার্টি। টাটকা লেবু চিপে রস বের করে নিন। তুলা লেবুর রসে ভিজিয়ে দাগের উপর লাগাতে পারেন। যদি সেনসিটিভ স্কিন হয়, সেক্ষেত্রে সামান্য পানি মিশিয়ে রস পাতলা করে নিন। অথবা লেবুর রসের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে নিন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে ১৫ দিনেই পার্থক্য দেখতে পাবেন।
চন্দন: অনেক সময় অ্যাকনে চলে গেলেও সেই দাগ কিছুতেই যেতে চায় না। সেই ধরনের দাগ থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করতে পারেন চন্দন। চন্দন অ্যাকনে হওয়া প্রতিরোধ করে এবং দাগ ত্বকে বসতে দেয় না। এটি ত্বককে ঠাণ্ডা রাখতেও সাহায্য করে। ত্বককে প্রাণবন্ত রাখতে নিয়মিত চন্দন ব্যবহার করতে পারেন। ২ টেবিল চামচ চন্দন গুঁড়া খানিকটা গোলাপজলের সঙ্গে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। মুখে আধঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার বা দুইবার এই মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।
ভিটামিন ই: ত্বক ভালো রাখতে এবং নতুন কোষ তৈরি করতে ভিটামিন-ই খুব প্রয়োজনীয়। আর মুখের দাগ দূর করতে চাইলে ত্বকের নতুন কোষ তৈরির দিকে নজর না দিয়ে উপায় নেই। কারণ দাগছোপ সাধারণত ত্বকের উপরের স্তরেই থাকে। যে কোনো স্কিন কেয়ার অয়েল বা ময়শ্চারাইজারের সঙ্গে একটা বা দুইটা ভিটামিন ই ক্যাপসুলের মিশ্রণ মিশিয়ে নিন। রাতে শুতে যাওয়ার আগে প্রতিদিন এই মিশ্রণ মুখে লাগান। পরদিন সকালে মুখ ধুয়ে ফেলুন। হাতে সময় থাকলে মাস্ক বানিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। আধকাপ মুলতানি মাটি, এক টেবিল চামচ পেঁপে এবং দুইটো ভিটামিন ই ক্যাপসুল একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া ভিটামিন ই অয়েলও সরাসরি মুখে লাগাতে পারেন। ১০ মিনিট রেখে মুখ ধুয়ে নিন। উপকার পাবেন।