সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩২ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

নোরা ফাতেহিকে আনার নামে প্রতারণা, প্রতারক রাজু গ্রেফতার

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২২
  • ১১৩ বার পঠিত

নোরা ফাতেহির বাংলাদেশ সফর নিয়ে আলোচনা সমালোচনার যেন শেষ নেই। তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ১৮ নভেম্বরই বাংলাদেশে আসছেন ভারতীয় আইটেম গার্ল ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নোরা ফাতেহি। এনবিআর বাধা দিলেও সব প্রশাসনিক উইংকে সহযোগিতার নির্দেশনা দিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়।

এ নিয়ে জল ঘোলা ও প্রতারণার দায়ে ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান উইমেন লিডারশিপ করপোরেশনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন মিরর গ্রুপের কর্ণধার শাহ জাহান ভূইয়া রাজু।

কানাডিয়ান এই মডেল, অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মূলত উপমহাদেশীয় দর্শকদের অন্তরে ঠাঁই করে নিয়েছেন বিভিন্ন চলচ্চিত্রের হিট আইটেম সংয়ে সরব উপস্থিতি দিয়ে।

জনপ্রিয়তার কারণেই তার চাহিদা বেড়েছে। নোরার কয়েকবার ঢাকায় আসার গুঞ্জন উঠলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। পরে চারটি শর্তে একটি পুরস্কার প্রদান তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে অংশ নেবার অনুমতি মেলে। কিন্তু এনবিআর জানায়, তারা এ নিয়ে উইমেন লিডারশিপ করপোরেশনের কাছ থেকে কোনো চিঠি পায়নি। ফলে আবারও ঝুলে যায় নোরার ঢাকা আসা।

এই নাটকীয়তা নতুন মোড় নেয় যখন মিরর গ্রুপ নামে একটি প্রতিষ্ঠান দাবি করে তারাও নোরাকে আনতে চেয়েছিল। দেয়া হয়েছে অগ্রিম টাকাও। যা ফেরত চাওয়া হয় আয়োজক উইমেন লিডারশিপ করপোরেশনের কাছে। তাদের নাম ভাঙিয়ে নানাজনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেবারও অভিযোগ ওঠে। উপায়ন্তর না পেয়ে বনানী থানায় প্রতারণার মামলা করে আয়োজকরা।

মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করা হয় মিরর গ্রুপের কর্ণধার শাহ জাহান ভূইয়া রাজুকে। ডিবি জানায়, তার বিরুদ্ধে আগেও ছিল প্রতারণার অভিযোগ।

বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে উইমেন লিডারশিপ করপোরেশনের থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা এবং ১০ লাখ টাকার একটি চেক হাতিয়ে নিয়েছে একটি বলে জানান ডিএমপি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

এই রাজু বিভিন্ন মেয়েদের মডেল বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে ফটোসুটের নামে ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে বাধ্য করে এবং ঐসমস্ত মেয়েদের অবৈধ অস্ত্র, স্বর্ণ ও মাদক ব্যবসার কাজে ব্যবহার করে এবং এদেরকে ভোগের পণ্য বানিয়ে ব্যবসা করে। এ সব কারণে মিডিয়া জগতের অনেকের কাছে শাজাহান ভুইয়া রাজুর অপকর্মের বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেটে পরিণত হয়েছে। যার অনুসন্ধান করলে আরো ভয়ঙ্কর তথ্য পাওয়া যাবে। রাজুর এসমস্ত জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ ধানমন্ডি থানা সহ দেশের বিভিন্ন থানায় এবং প্রশাসনে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। যার ভিত্তিতে গত ২০১৭ সালে একবার ধানমন্ডি থানায় রাজু আটক আছে এ খবর পেয়ে কাকলি পারভীন তিনি থানায় গিয়ে পুলিশ এবং রাজুর মুখোমুখি হলে রাজু থানায় পুলিশের সামনে কান্নাকাটি করে দুই মাসের মধ্যে আমার টাকা ফেরত দিবে মর্মে রাজু কাকলি পারভীনকে সাউথইস্ট ব্যাংক লিঃ সাতমসজিদ রোড ব্রাঞ্চের একটি ১০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করে, ০১/০৭/২০২১৭ইং তারিখ চেক পাশ হবে, এ কথা বলে থানাকে কৌশলে ম্যানেজ করে পালিয়ে যায়। সেখান থেকে আর রাজুকে খুজে পাওয়া যায়না এবং রাজুর দেওয়া চেকটিও আর পাশ হয়নি। কিছুদিন আগে বনানীর হোটেল শেরাটনে ভারতীয় শিল্পী শীল্পাশেটিকে এনে দেশী বিদেশীদের নিয়ে বিজনেজ এ্যাওয়ার্ড ও ফ্যাশন শো করে মিরর ফ্যাশন বিজনেজ ম্যাগাজিনের ব্যানারে। অথচ যার পত্রিকার ডিকলারেশন নাই। প্রতিষ্ঠানের সঠিক অস্তিত্ব নাই। বরং মিথ্যা ও জালিয়াতী করে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে অস্ংখ্য মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নানা ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছে। তার এসমস্ত অপকর্মের জন্য কিছু অসৎ ও কালোটাকার মানুষকে ব্যবহার করেছে। এই ভন্ড রাজু আইসিটি অ্যাক্ট লংঘন করে অনবরত অপরাধ করে যাচ্ছে। এটা কি দেখার কেউ নেই? এখানে রাজুর আরো কিছু অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রতারণার ফিরিস্তি তুলে ধরা হলো।

১। এই রাজুর মিরর পত্রিকা সহ কোনো পত্রিকা চালানোর সরকারের অনুমতি নেই তারপরেও সে কিভাবে পত্রিকা চালায় এবং প্রতিষ্ঠানের নামে অনুষ্ঠান করে!

২। এই রাজু সাপ্তাহিক ফিন্যানশিয়াল মিরর পত্রিকার কো-পাবলিশার্স ছিল। সেটা ঢাকা ডিসি অফিসে গিয়ে সে এবং অপর কো-পাবলিশার্স ও সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলম পত্রিকাটি সারেন্ডার করেছে। এবং যথা রীতি সাংবাদিক মশি শ্রাবনের নিকট বিক্রি সহ হস্তান্তর সম্পাদন করে বরং মিথ্যা ও বানোয়াটি বিভ্রান্তি মূলক তথ্য বানিয়ে সরকারের অনুমতি ছাড়া পত্রিকা প্রকাশ ও এর ব্যানারে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করছে।

৩। এই রাজুর নিজেস্ব কোনো বৈধ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নেই, যেগুলো সে উপস্থাপন করে সেগুলি সবই কপি রাইট করা দুনম্বর করে সাজানো, অনুসন্ধানে সত্যতা মিলবে।

৪। ঢাকার ডিসি এবং ডিএফপি সহ তথ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শৃংখলা ভঙ্গ, মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন ও অনুমতি ছাড়া পত্রিকা প্রকাশ সহ নানা ধরনের অন্যায় অনিয়মের কারনে সে ডিসি অফিস ও ডিএফপিতে কালো তালিকা ভুক্ত রয়েছে এই শাহজাহান ভূইয়া রাজু।

৫। এই রাজু মিডিয়া ব্যাবসার আড়ালে সরকার বিরোধী বিভিন্ন অপকর্ম ও অপশক্তির সাথে সম্পৃক্ত থেকে রাষ্ট্র বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত রয়েছে, তাঁর স্থায়ী ঠিকানাঃ নোয়াখালী জেলায় হলেও তথ্য গোপন রেখে ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা সেজেছে।

৬। এই রাজু মিডিয়া ব্যবসার আড়ালে নারী, স্বর্ণ, মাদক ব্যবসা ও পাচারের সাথে জড়িত থেকে ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, নিকেতন, উত্তরা, মুহাম্মদপুর ও লাল মাটিয়াতে একেকটি অফিস / বাসা / বাড়ী ভাড়া নিয়ে মাদক ও নারী ব্যবসা করছে।
৭। রাজুর বর্ণিত অপরাধের কারণে আইসিটি অ্যাক্ট চরম ভাবে লংঘন হয়েছে। এর জন্যে তার বীরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্টের অধীনেও আরো মামলা হতে পারে।

৮। এই রাজু ভূয়া কোম্পানী সহ অনেকগুলো ব্যাংকে একাউন্ট খুলে বিভিন্ন স্বাক্ষরে পরিচালনা করে থাকে এবং এদেশে কিছু অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশীদের সাথে যোগসাজশে জাল ডলার ও ভারতীয় রূপী সহ কার্ড জালিয়াতি ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠ তদন্তের সাথে তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে আনলে অসংখ্য মানুষ সাক্ষ্য প্রমাণ নিয়ে হাজির হবে । এখন তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না।

৯। এই রাজু ২০১৩ সালে একবার বিদেশী শিল্পী গোলাম আলীকে আনার নামে প্রতারণা করে এবং ২০১৪ সালে বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে পাকিস্তানী শিল্পী রাহাত ফাতে আলী খানকে এনে অনুষ্ঠান করার নামে প্রতারণা করে কোটি টাকা হাতিয়েছে এবং ২০১৯ সালে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে দেশী-বিদেশী জুয়েলারী মেলার নামে বেশ কয়েকটি কোম্পানি থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে কোনো প্রোগ্রাম না করে আইন-শৃঙ্খলার চোখকে ফাকি দিয়ে তাঁর অপকর্মগুলো চালিয়ে যাচ্ছে। এসমস্ত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট থানায় পাওয়া যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com