অর্থনীতির স্বার্থে পুরো দেশকে আকাশপথে সংযুক্ত করতে চায় সরকার। তাই অব্যবহৃত অবস্থায় থাকা বিমানবন্দরগুলো পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
সম্প্রতি সময় সংবাদকে প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশের পরিত্যক্ত ৭টি বিমানবন্দর আবারও চালু করার তোড়জোড় চলছে।
সরেজমিন বগুড়া বিমানবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে রানওয়ে আর টারমাকের কাজ চলছে। মাঝে মাঝে বিমানবাহিনীর ছোট এয়ারক্রাফটগুলো পরীক্ষামূলকভাবে ওঠানামা করানো হচ্ছে এখানে। একই চিত্র লালমনিরহাট বিমানবন্দরেও। সিভিল এভিয়েশনের তথ্য বলছে, দেশজুড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফুট রানওয়ে আছে – এমন বিমানবন্দরের সংখ্যা ২৮টি।
দ্রুত চলাচলের জন্য আকাশপথের কোনো বিকল্প নেই, এমন চিন্তার সফল বাস্তবায়ন ঘটিয়েছে পাশের দেশ ভারত। যেখানে শেষ চার বছরেই নতুন বিমানবন্দর তৈরি হয়েছে ৩৬টি। অথচ বাংলাদেশে বন্ধ হয়েছে ৯০ দশকেও চালু থাকা কুমিল্লা, ঈশ্বরদী আর শমসেরনগরের মতো বিমানবন্দর।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদ উল আলমের মতে, বিমানযাত্রায় মানুষের আগ্রহ আর নীতিনির্ধারকদের চিন্তা মিলছে না এক বিন্দুতে।
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতে বিগত চার বছরে ৩৬টি বিমানবন্দর তৈরি করা হয়েছে। অথচ আমাদের দেশের বয়স হয়ে গেছে ৫১ বছর, মানে স্বাধীনতার। আমরা কিন্তু একটি নতুন বিমানবন্দরও তৈরি করতে পারিনি। নীতিগত সিদ্ধান্তের অভাবেই এটা কিন্তু হচ্ছে না। আমি যতটুকু জানি, সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ বা মন্ত্রণালয় এটার ব্যাপারে আগ্রহী। তাদের আগ্রহের ব্যাপারটি আমরা জেনেছি। আমার মনে হয়, ওপর মহলের সিদ্ধান্তের অভাবেই এটা এগোচ্ছে না।’
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা থেকে কক্সবাজার কিংবা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটে যে পরিমাণ যাত্রী থাকবে, ঈশ্বরদী বা কুমিল্লায় কিন্তু সে পরিমাণ যাত্রী থাকবে না। কোন রুটে কত যাত্রী সেটি চিন্তা করা হবে না। এ ধরনের ছোট বিমানবন্দর পৃথিবীর সব দেশে আছে।’
যদিও এবার সুখবর দিয়ে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘পরিত্যক্ত সাতটি বিমানবন্দর চালু করতে কাজ শুরু হচ্ছে শিগগিরই। এক্ষেত্রে দূরত্ব যাই হোক, ছোট উড়োজাহাজ দিয়ে হলেও নতুন নতুন গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনায় আগ্রহ দেখাচ্ছে এয়ারলাইনসগুলোও।’
তিনি বলেন, ‘অনেক বিমানবন্দর অব্যবহৃত অবস্থায় আছে, যেগুলোকে স্টল বিমানবন্দর বলা যাবে। সংক্ষিপ্ত ল্যান্ডিংয়ের জন্য এসব বিমানবন্দর এখন প্রয়োজন। পর্যায়ক্রমে সব বিমানবন্দরকে আধুনিক রূপ দিয়ে মানুষের যাতায়াত সুবিধা বাড়ানো এবং অর্থনৈতিকভাবে যাতে লাভবান হওয়া যায়, তার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমাদের এভিয়েশনের ক্ষেত্রগুলো কাজে লাগাতে হবে।’
প্রাথমিকভাবে ঠাকুরগাঁও, বগুড়া, লালমনিরহাট, কুমিল্লা, ঈশ্বরদী আর শমসেরনগর বিমানবন্দর চালু করতে শুরু হচ্ছে যাচাই-বাছাই। এর বাইরে বাগেরহাটের ফয়লায় চলছে নতুন বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ। পটুয়াখালীর পায়রায় সরকার তৈরি করতে যাচ্ছে আরেকটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।