প্রতিবেশী ইউক্রেনে অভিযান পরিচালনার মধ্যেই সামরিক বাহিনীতে নিয়োগের সর্বোচ্চ বয়সসীমা কমিয়েছে রাশিয়া। বুধবার (২৫ মে) দেশটির পার্লামেন্টে তড়িঘড়ি করে এমন একটি আইন পাস হয়েছে।
একটি একক অধিবেশনে বিতর্ক শেষে পার্লামেন্ট স্টেইট দুমার নিম্নকক্ষে আইনটি পাসে সায় দিয়েছেন এমপিরা। এরপর দ্রুত সময়ের মধ্যেই উচ্চকক্ষ দ্য ফেডারেশন কাউন্সিলেও সম্মতি মিলেছে।
এখন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সই দিলেই এটি কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ফিন্যানসিয়াল টাইমস এমন খবর দিয়েছে।
স্টেইট দুমার স্পিকার ভিয়েচেসলাভ ভলোদিন বলেন, সামরিক বাহিনীকে আজ শক্তিশালী করা দরকার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কেও সহায়তা করতে হবে। সামরিক বাহিনী যাতে জয়ী হয়, তা নিশ্চিত করতে আমাদের সুপ্রিম কমান্ডার সবকিছু করছেন। এখন আমাদের সহায়তা দরকার।
বর্তমানে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর পেশাদার সৈনিক হতে হলে বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে। আর বিদেশিদের ক্ষেত্রে লাগবে ১৮ থেকে ৩০ বছর।
গেল ২৫ মার্চ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে তাদের এক হাজার ৩৫১ সেনা নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে তিন হাজার ৮২৫ জন। এরপর থেকে ইউক্রেনে অভিযানে সামরিক হতাহতের তথ্য হালনাগাদ করেনি মস্কো।
তবে আগের মতো ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে কামানের গোলার বৃষ্টি ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দেশটির শহরগুলো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে রুশ বাহিনী।
নতুন বিলে বলা হয়েছে, উচ্চ-পেশাদার বিশেষজ্ঞদের নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার অস্ত্র ব্যবহার জানতে হবে। এছাড়া সামরিক অস্ত্র ও যন্ত্রপাতি পরিচালনা করতে হবে।
ইউক্রেনকে নিরস্ত্রিকরণ ও নাৎসিমুক্ত করতে গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন পুতিন। রাজধানী কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হওয়ার পর বর্তমানে পূর্ব ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চল ঘিরে হামলা জোরদার করছে মস্কো।
অঞ্চলটিতে বর্তমানে কয়েক হাজার রুশ সেনা অবস্থান করছে। ইউক্রেনের বাহিনীকে ঘিরে ফেলতে তিন দিক থেকে তারা হামলা অব্যাহত রেখেছে। সিভিরোদোনেৎসক ও তার জমজ শহর লিসিচানৎসক প্রতিরোধে লড়াই অব্যাহত রেখেছে কিয়েভ বাহিনী।
পোপসানা শহরের চারপাশের পাহাড়ি অঞ্চল দখলে নেয়ায় সিভিরোদোনেৎসকের এলাকাগুলোতে সহজেই কামানোর গোলা নিক্ষেপ করতে পারছে রুশ বাহিনী। এছাড়াও সেখানে ১০টি অত্যাধুনিক বিএমপি-টি ‘টারমিনেটর’ সাঁজোয়া যান মোতায়েন করেছে রাশিয়া।
ফিন্যানসিয়াল টাইমস বলছে, সিভিরোদোনেৎসক ও লিসিচানৎসকে রাশিয়া যদি ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ঘিরে ফেলতে সক্ষম হয়, তবে এটি হবে তাদের দ্বিতীয় সফল অবরোধ। এরআগে তিন মাস ঘেরাও করে রাখার পর গত সপ্তাহে মারিউপুল শহরের পতন ঘটেছে।
এর মধ্য দিয়ে রাশিয়া পুরো লুহানৎসক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ পাবে। লুহানৎসক ও দোনেৎসক মিলে দোনবাস অঞ্চল। সামরিক অভিযান শুরুর আগে অঞ্চল দুটিকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন।