মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫, ১২:১৪ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান
সংবাদ শিরোনাম ::

ঠাকুরগাঁওয়ে মুকুলে ছেয়ে গেছে আম গাছগুলো — ভাল ফলনের সম্ভাবনা

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৪ মার্চ, ২০২৫
  • ২ বার পঠিত

মোঃ মজিবর রহমান শেখ
ঠাকুরগাঁও ঃঠাকুরগাঁওয়ে গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল। মুকুল ভরা ডালে নতুন পাতার হাতছানি। মৌ মৌ ঘ্রাণে মাতোয়ারা মৌমাছির দল। ভাষায় যথাযথ ছবি ফোটানো না গেলেও আমের গাছে এমন মুকুল ফোটা দৃশ্য এখন সারা জেলাজুড়ে যেন হলুদ আর সবুজের মিলনমেলা। জানা যায়, বাংলাদেশে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ঠাকুরগাঁও জেলায় আমের ভাল ফলন হয়। বাহারী আর মন মাতানো তদের নাম যেমন ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসা, অরুনা, আম্রপালি, মল্লিকা, সুবর্নরেখা, মিশ্রিদানা, নিলাম্বরী, কালীভোগ, কাঁচামিঠা, আলফানসো, বারোমাসি, তোতাপূরী, কারাবাউ, কেঊই সাউই, গোপাল খাস, কেন্ট, সূর্যপূরী, পাহুতান, ত্রিফলা, হাড়িভাঙ্গা, ছাতাপরা, গুঠলি, লখনা, আদাইরা, কলাবতী ইত্যাদি। বাংলাদেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও এলাকায় আম চাষ বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে।

বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা। এ জেলার মাটি তুলনামূলক উঁচু এবং মাটির প্রকৃতি বেলে দো-আঁশ। এসব জমিতে কয়েক বছর আগেও চাষিরা গম, ধান, পাট ইত্যাদি আবাদ করতেন। কিন্তু ধান গম আবাদ করে তেমন একটা লাভবান হওয়া যায় না। তাই জেলার বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল এলাকায় ব্যাপক আম বাগান গড়ে উঠেছে। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় আম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয় ৩ হাজার ২৩৩ হেক্টর। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলায় আম বাগানের সংখ্যা ৩ হাজার ২৩৫ হেক্টর ও বসত বাড়ির আম গাছের সংখ্যা ১ হাজার ৮৪৪ হেক্টর জমি। এ বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪৭ হাজার ৭শ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন হবে বলে প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পুরাতন ঠাকুরগাঁও এলাকার আম বাগানের মালিক রাজ বলেন, একবিঘা জমিতে অন্যান্য ফসল উৎপাদন করে যে লাভ হয়, আম বাগান করে তার চাইতে কয়েকগুণ লাভবান হওয়া যায়। গতবছর তিনি তার বাগান থেকে সারাদেশে বিষমুক্ত আম সরবরাহ করেন। তার মতো অনেক বেকার যুবক এখন বাণিজ্যিক ভাবে আম্রপালি আমের বাগানের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এসব বাগানে গাছ লাগানোর ২/৩ বছরের মধ্যেই আম পাওয়া যায়। লাগাতার ফল দেয় ১০/১২ বছর। ফলনও হয় ব্যাপক। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, আম বাগান ফল ব্যবসায়ীদের কাছে আগাম বিক্রি করে দেওয়া যায়। দুই-তিন বছর কিংবা তার অধিক সময়ের জন্য অগ্রিম বিক্রি হয়ে যায় বাগানগুলো। অনেক সময় বাগান বিক্রি হয় মুকুল দেখে। আবার কিছু বাগান বিক্রি হয় ফল মাঝারি আকারের হলে। বাগান ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমেদ জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ব্যাপক মুকুল দেখা যাচ্ছে। মুকুল দেখে আশা করা যায় এবার আমের ব্যাপক ফলন হবে। শিলাবৃষ্টি বা ঝড় না হলে ব্যাপক আমের ফলন পাওয়া যাবে বলে জানান, তিনি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: সিরাজুল ইসলাম জানান, ঠাকুরগাঁও জেলার আমের ভাল ফলন হয়। আম চাষীদের কৃষি বিভাগ থেকে যাবতীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলার সূর্যপূরী আম সারাদেশে সুনাম কুড়িয়েছে। কৃষকদের পোকা দমনে যাবতীয় প্রস্তুতিমূলক সেবা ও পরামর্শ প্রদান করা হয়। সূর্যপুরী আমের আকার দেখতে ছোট হলেও স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে আমের ব্যাপক ফলন আশা করা যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com