নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হেনস্তাকারীদের আগামী শনিবারের (৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে পরদিন (রোববার) সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে। একই সঙ্গে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনের মঞ্চ তৈরি করা হবে। যেখান থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মঞ্চ ছাড়া হবে না।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের ভূইয়া এসব কথা বলেন।
আবুল খায়ের ভূইয়া বলেন, ওয়ান/ইলেভেনের সময় অনেক নেতা ও তাদের পরিবার সাংবাদিকদের দ্বারস্থ হতেন। বাঁচার জন্য কি করেননি তারা। এখন ক্ষমতা পেয়ে সেই সাংবাদিকদের ওপরই নির্যাতন চালাচ্ছেন। এই দিন বেশি দিন থাকবে না। পুলিশের ওপর হামলা হওয়ার কারণে একজন নবনির্বাচিত কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠালেন অথচ সাংবাদিক নির্যাতনকারীদের ধরছেন না, এটা ঠিক হচ্ছে না।
অবিলম্বে সাংবাদিক নির্যাতনকারীদের গ্রেফতারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখন একটি বা দুটি ঘটনায় হামলাকারীদের গ্রেফতার করছেন না, কাল যখন আন্দোলনের মঞ্চ তৈরি হবে সেদিন দাবি উঠবে, স্বাধীনতার পর ভোট পর্যন্ত যত নির্যাতন হয়েছে তার সবগুলোকে ধরতে হবে। সেদিন কী করবেন, বুঝে নেন আইজিপি ও কমিশনার সাহেব।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা হওয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত, উদ্বেলিত ও আতঙ্কিত। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। সাংবাদিকরা সোচ্চার হয়েছেন, ডিআরইউও আগামীকাল প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছে। অবিলম্বে হামলা ও নির্যাতনকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে পুলিশকে আহ্বান জানান তিনি।
ডিআরইউয়ের সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, দুই মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরও হামলার শিকার সাংবাদিক সুমনকে হাসপাতালে দেখতে যাননি। এ কেমন মেয়র? এমন মেয়রকে চান না ঢাকাবাসী। মেয়র এখন ফুল নিতে ব্যস্ত। ফুল নেবেন; তবে আহত সাংবাদিকদেরও দেখতে যেতে হবে।
ডিআরইউর সাবেক সেক্রেটারি মোরসালিন নোমানী বলেন, কমিশনার খোকনসহ হামলাকারী তার সাঙ্গপাঙ্গদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় খোকনের কমিশনার পদ স্থগিত করুক এটাই আশা করবো। আমরা সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে চাই। সেই সুযোগটাই চাই। হামলা মামলা চাই না।
ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে যারা দালালি করছেন, যারা মিথ্যা প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন, তারা মূলত কমিউনিটির সঙ্গে গাদ্দারি করছেন। এসব ছাড়ুন, দালালি বন্ধ করুন। আপনাদেরও পরিণতি খারাপ হবে। সেদিন কাউকে পাশে পাবেন না। হামলাকারীদের গ্রেফতার করা না হলে ঢাকা শহর অচল করে দেয়া হবে। রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাবে। কেউ রাস্তায় বের হতে পারবেন না। আমাদের প্রতিপক্ষ ভাববেন না। সাংবাদিকদের গায়ে হাত দেবেন আর আমরা বসে থাকবো তা হবে না।
মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, আমার ভাই হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করছে তখন পুলিশ বাহিনী ঘুমাচ্ছে। হামলাকারীদের খুঁজে পায় না। সাংবাদিক নেতাদের কঠোর কর্মসূচি দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্র্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খান, মাহবুব আলম লাবলু, যুগ্ম সম্পাদক সাখাওয়াত কাওসার, রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মোকছুদার রহমান, ডিইউজের সাবেক জনকল্যাণ সম্পাদক মেহেদী হাসানসহ ডিআরইউ, ক্র্যাব ও ডিইউজের নেতারা।