আন্তর্জাতিক ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ:প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পশ্চিমবঙ্গে কর্মবিরতি পালন করছিলেন বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার পর ধর্মঘটরত চিকিৎসকদের ‘আন্দোলনের কেন্দ্র’ নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ থেকে মিডিয়ার সামনে ধর্মঘট প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করা হয়।
সংকট মেটানোর লক্ষ্যে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক দীর্ঘ বৈঠক করেন ধর্মঘটে অংশ নেয়া চিকিৎসকরা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, চিকিৎসকদের প্রায় সব দাবি ও প্রস্তাবই গ্রহণ করেছেন মমতা।
জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এবং সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রায় ঘন্টা দেড়েকের বৈঠকের একেবারে শেষে মমতা চাইছিলেন, সেখান থেকেই যেন চিকিৎসকরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন।
তিনি নিজের মতো করে তাদের এটাও বলেছিলেন যে, ‘লক্ষী ভাই-বোনেরা আমার, তোমরা প্লিজ কাজে ফিরে এসো।’ কিন্তু চিকিৎসকরা খুব বিনীতভাবেই জানান যে, তাদের আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল এন আর এস মেডিকেল কলেজে ফিরে গিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে নিয়েই কাজে ফেরার ঘোষণা করা হবে। পুরো বৈঠকটিই টিভিতে লাইভ দেখানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যু এবং চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে দুই জুনিয়ার চিকিৎসককে মারধর করা হয়। এরপরই বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা ধর্মঘট শুরু করেন।
চিকিৎসকদের মূল দাবিগুলো ছিল- হাসপাতালগুলোতে কর্মরত চিকিৎসকদের নিরাপত্তা এবং পরিকাঠামো ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত। মুখ্যমন্ত্রী ধর্মঘটে অংশ নেয়া চিকিৎসকদের সব অভাব অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং সেখানেই হাজির আমলাদের এ ব্যাপারে নির্দেশ দেন।
এসবের মধ্যে রয়েছে জরুরি বিভাগে রোগীর আত্মীয়দের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, গেট লাগানো, প্যানিক বোতামের ব্যবস্থা করা, অভিযোগ সেল তৈরি করা বা কোনও চিকিৎসক আক্রান্ত হলে রাজ্যজুড়ে একটি টোল-ফ্রি নম্বরে যাতে জানানো যায় তার বন্দোবস্ত করা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা এসব দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু নির্দেশ দেন। ইন্ডিয়ান মেডিকেল এসোসিয়েশনের ডাকা এ ধর্মঘট সারা ভারতেই পালিত হয়েছে। শুধু সরকারি হাসপাতাল নয়, অনেক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরাও যোগ দিয়েছিলেন এই ধর্মঘটে। শুধু জরুরি বিভাগগুলো চালু ছিল। সেজন্য এই কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন।