নেত্রকোণার মদনে অটোরিকশায় ফেলে যাওয়া ১ লাখ ৩০ হাজার টাকাসহ ব্যাগ ফিরিয়ে দিলেন রাসেল মিয়া নামে এক চালক।
সোমবার রাত ১১টার দিকে মদন বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সাদেক আকন্দের চেম্বারে টাকার মালিক রহিমা আক্তারের কাছে ফেরত দেওয়া হয়। অটোচালক রাসেল মদন সদর ইউনিয়নের কুলিয়াটি দক্ষিণপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে।
জানা গেছে, রহিমা আক্তার আটপাড়া উপজেলার তারাচাপুর গ্রামের ওয়াছকরুনীর স্ত্রী। সোমবার বিকেলে মদন ব্রাক অফিস থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার একটি ঋণ উত্তোলন করেন। তার স্বামী ওয়াছকরুনী মদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকায় টাকার ব্যাগ নিয়ে হাসপাতালে যান। সেখানে রহিমার ননদ তারিফা আক্তার তার অসুস্থ ভাইকে দেখতে হাসপাতালে আসেন। পরে রহিমার সঙ্গে থাকা টাকার ব্যাগ তারিফা আক্তরকে দিয়ে দেন। তারিফা আক্তার টাকার ব্যাগ অটোরিকশা ফেলে বাড়িতে চলে যান।
এদিকে অটোচালক রাসেল মিয়া সোমবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে গাড়িতে টাকার ব্যাগ পেয়ে তার বাবাকে বিষয়টি জানান। রাসেল তার বাবার পরামর্শে অটোস্ট্যান্ডের মাস্টার ছোটন মিয়াকে জানান। এরপর ছোটন মিয়া অটোস্ট্যান্ডের সভাপতি কামরুল মিয়াকে জানান। কামরুল মিয়া স্ট্যান্ডে চালকদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং প্রকৃত মালিককে খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান পান। সোমবার রাত ১১টার দিকে টাকার মালিক রহিমা আক্তারকে মদন বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সাদেক আকন্দর চেম্বারে ব্যাগটি ফেরত দেন।
রহিমা আক্তার বলেন, মদন ব্রাক অফিস থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করেছিলাম। টাকাটা না পেলে আমার খুব বড় ক্ষতি হয়ে যেত। অটোরিকশা চালক রাসেল মিয়া টাকার প্রতি লোভ না করে ফেরত দিয়ে বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা করেছেন।
অটোচালক রাসেল মিয়া বলেন, আমি হাসপাতালের সামনে থেকে যাত্রী এনে মদন বাজার নামিয়ে দিয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার গাড়িতে একটি ব্যাগ। ব্যাগ খুলে দেখি অনেক টাকা এবং কিছু কাপড়-চোপড়। পরে আমার বাবাকে জানালে তার পরামর্শ স্ট্যান্ডের সভাপতিকে জানাই। পরে প্রকৃত মালিকের সন্ধান পেলে তার হাতে টাকাটা তুলে দেই।
তিনি আরো বলেন, আমার অন্যের জিনিসপত্রের প্রতি কোনো লোক নেই। আমি অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় করি তাতে আমার সংসার চলে যায়।
অটো স্ট্যান্ডের সভাপতি কামরুল ইসলাম বলেন, অটোচালক রাসেল আমাকে জানালে আমি স্ট্যান্ডের চালকদের সঙ্গে আলোচনা করি। পরে রাতেই ব্যাগের মালিকের সন্ধান পাই। রাসেলকে নিয়ে টাকার ব্যাগের মালিকের কাছে ফেরত দেই।
মদন বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সাদেক আকন্দ বলেন, এখনকার সময় এরকম সৎ মানুষ পাওয়া খুব কঠিন।