কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীসহ ১৬ নদীর পানি বেড়েই চলছে। তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও ধরলা নদীর পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী এবং রাজারহাট উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ডুবে গেছে চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ও আবাদি জমি। বাড়ির চারপাশে পানি উঠায় দুর্ভোগে পড়েছে এসব চরাঞ্চলের মানুষ। নৌকা আর ভেলা দিয়ে যাতায়াত করছেন তারা।
শুক্রবার সকাল ৬টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য মতে, তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও ধরলা নদীর পানি তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী এবং রাজারহাট উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্য মতে ১৫ হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন সড়ক। ডুবে গেছে সবজি ক্ষেতসহ বিভিন্ন উঠতি ফসল।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, জেলায় স্বল্প মেয়াদি এই বন্যা পরিস্থিতি দু-একদিনের মধ্যে উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পানি বৃদ্ধির কারণে ৫-৬টি স্থানে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চলতি বন্যায় জেলায় প্রায় ৪৫৩ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। এরমধ্যে মরিচ, আউশ ধান, পাট, চিনা, পটল ক্ষেতসহ অন্যান্য ফসল রয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, বন্যাকবলিত মানুষের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৯১ জন। উপজেলা পর্যায়ে ১৪৪ মেট্রিকটন জিআর চাল ও নগদ ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ত্রাণ হিসাবে উপ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৪০৪টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে দুর্গত মানুষ আশ্রয় নেয়া শুরু করেছেন। আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে খাদ্য সহায়তা। চারটি স্পিড বোট ও দুটি নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে বন্যার্তদের উদ্ধারের জন্য। জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।