নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় অবস্থিত পোশাক কারখানা এআর ফ্যাশন। টানা তিন মাস তাদের বেতন বকেয়া। বকেয়া বেতনের দাবিতে শতাধিক শ্রমিক বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালে প্রায় এক ঘণ্টা পোশাক কারখানার সামনের প্রগতি স্মরণির রাস্তা অবরোধ করে রাখেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিট থেকে সকাল ১০টা ৪৪ মিনিট পর্যন্ত প্রগতি স্মরণির ব্যস্ত এ রাস্তা অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। এছাড়া বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পোশাক কারখানার মালিককেও অবরুদ্ধ করে রাখেন শ্রমিকরা।
পোশাক শ্রমিকদের দাবি, তাদের তিন মাসের বেতন দিচ্ছেন না এআর ফ্যাশনের মালিক। এ কারণে তারা রাস্তা ও মালিককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। বকেয়া বেতন না দেয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
অন্যদিকে কারখানার নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা মালিকপক্ষ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছেন।
পোশাক শ্রমিকরা জানান, গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে মালিকপক্ষ তাদের বকেয়া বেতন দিচ্ছেন, দেবেন বলে বারবার তারিখ পরিবর্তন করেন। কিন্তু গতকাল বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বেতন না দেয়ায় তারা রাতে গার্মেন্টে অবস্থান নেন। বুধবার রাতেই বিদ্যুৎসহ সবধরনের সেবা বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। এভাবেই শতাধিক নারী-পুরুষ (শ্রমিক) রাত পার করেন। সকালে তারা রাস্তা অবরোধ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এআর ফ্যাশনে গিয়ে দেখা যায়, ছয়তলা ভবনের নিচে পুলিশের অবস্থান। কারখানায় তালা ঝুলানো। পাঁচতলায় কারখানা মালিকের কক্ষের সামনেও পুলিশের অবস্থান। সেখানে শ্রমিকদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়।
দুলালী নামে এক শ্রমিক বলেন, তিন মাস ধরে বেতন পাই না। বাসাভাড়া দিতে পারি না। খাবারের টাকা নাই। এভাবে তো চলা যায় না। মালিক খালি তারিখ দেয়, কিন্তু বেতন দেয় না। আমরা খুব বিপদে আছি।
মালিকের কক্ষে প্রবেশ করে দেখা যায়, মালিকের কাছ থেকে বকেয়া বেতন আদায়ের চেষ্টা করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করে জানা যায়, তিন মাসের বেতন বকেয়া থাকলেও মালিক এক মাসের বেতন দেয়ার চেষ্টা করছেন। এক মাসের বেতনের জন্য গ্রামের জমি বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকা জোগাড়ের জন্য তার ভাইকে বলছেন কারখানার মালিক।
উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের মালিক জানান, প্রতি মাসে সাত লাখ টাকার ওপরে শ্রমিকদের বেতন আসে। তাদের তিন মাসের বেতন বকেয়া থাকলেও আপাতত পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করছেন।