নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মন্তব্য করেছেন করে বলেছেন,জাতীয় সংসদে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বিরোধীরা সমালোচনা না করলেও পারতেন । দেশের অর্থনীতি প্রসঙ্গে বলেছেন, আমাদের ঘাটতি রয়েছে রফতানি বাণিজ্য, ৫ শতাংশের মতো। নেগিটিভ গ্রোথ রয়েছে। বছর শেষে তা থাকবে না। বর্তমানে পৃথিবীতে একটি দেশও নেই যেখানে নেগেটিভ গ্রোথ নেই। সামষ্টিক অর্থনীতি ওভারঅল খারাপ নয়।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী গত বুধবার জাতীয় সংসদে স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাগুলোর তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা তৈরি বিষয়ক বিল পাসের জন্য সংসদে তুললে বিরোধিতায় সরব হন বিরোধীদের আসনে বসা দুই দলের সদস্যরা। এ সময় অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে তারা বিভিন্ন মন্তব্য করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তারা বিল প্রত্যাহারের কারণ হিসেবে বলছে, জোর করে টাকা নিয়ে আসার জন্য এ আইন করেছি। তারা যদি বোঝেন তাহলে কেন তারা বলছেন যেসব প্রতিষ্ঠান বাকি রয়েছে তা-ও অন্তর্ভুক্ত করতে। আসলে তারা আমাদের ভালো কাজগুলো পছন্দ করে না, সামান্য কিছু পেলেই হইচই করে।’
তিনি বলেন, ‘সংসদে বসে বসে দেখতাম, কোনোদিন কথা বলতাম না। এখন কথা বলতে হচ্ছে। আগে দু-একজন রিঅ্যাক্ট করতেন। এখন তারা যেভাবে রিঅ্যাক্ট করে, এগুলো কোনো গণতন্ত্রের ভাষা নয়। সভ্য সমাজ এগুলো উচ্চারণ করবে না।’
একজন সংসদ সদস্য বলেছেন, ‘আমি ব্যবসায়ী মন্ত্রী। ব্যবসায়ী মন্ত্রী হওয়ার কারণে তার মতে ব্যবসাটা ভালো বুঝি, টাকা-পয়সা হিসাবটা ভালো বুঝি এবং কখন কার থেকে টাকা নিতে হবে সেটাও ভালো বুঝি। এ কথা সঠিক নয়। তিনি এ রকমভাবে পারসোনাল লেবেলে না গেলেও পারতেন। একসময় ব্যবসায়ী ছিলাম, ব্যবসা করা তো অপরাধ নয়, ব্যবসা করেছি ১২ বছর আগে।’
‘কাল (গতকাল বুধবার) সামান্য সময়ের জন্য আমার খারাপ লেগেছে। আমি বলতে বাধ্য হয়েছি, ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এটা বলতে পারলেন, আমি এ বছর সারাবিশ্বের অর্থমন্ত্রীর সেরা, এটা তো বলেন না’- যোগ করেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের বক্তব্য হলো ব্যাংকের দুর্বল অবস্থা, টাকা পাচার হচ্ছে। তারা বলছেন লক্ষ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। তারা কীভাবে জানলেন? আমি আসার পর কয়দিন (এ বিষয়ে) ছাপাতে পেরেছেন? আমি তো গত এক বছর দেখেনি। আগে মাঝে মাঝে নজরে পড়ত।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘাটতি রয়েছে রফতানি বাণিজ্য, ৫ শতাংশের মতো। নেগিটিভ গ্রোথ রয়েছে। বছর শেষে তা থাকবে না। বর্তমানে পৃথিবীতে একটি দেশও নেই যেখানে নেগেটিভ গ্রোথ নেই। থাইল্যান্ডে, মালয়েশিয়ায়, ভিয়েতনামে, শ্রীলংকায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নে, ভারতে নেগেটিভ গ্রোথ হয়েছে- এটা স্বীকার করতে হবে। এর থেকে বেরিয়ে আসতে কয়েকটি বৈঠক করা হয়েছে এবং সেখান থেকেও বের হয়ে আসব। সামষ্টিক অর্থনীতি ওভারঅল খারাপ নয়।’
সংসদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংসদে যারা বিরোধী দল আছে তাদেরও সমর্থন লাগবে, তাদেরও অবদান আছে- কাউকে বাদ দিয়ে নয়। আমি মনে করি, কালকের বিষয় ডিপলি নেবেন না, নেয়ার দরকার নেই। আমিও ভুলে গেছি। কালকেই আমাকে পেছন থেকে বন্ধু-বান্ধব বলেছে, তুমিও সেখানে যাও। আমি বলেছি, ওদিকে যেতে পারব না, সেই ভাষা আমি শিখিনি। আমরা এটাকে মন থেকে ঝেড়ে ফেলে দেই।’
করোনাভাইরাস নিয়ে কোনো প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারা বিশ্বের অর্থনীতি এমনভাবে যুক্ত, এক দেশে হলে অন্য দেশে প্রভাব ফেলে-আমরা এটা চাই না।