নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: দেশে বর্তমানে দুঃসময় চলছে এমন দাবি করে প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর স্মরণে শোকসভায় বক্তারা বলেছেন, কোনো ধরনের ভয়ভীতি মাহফুজ উল্লাহর কাছে পৌঁছাতে পারেনি। এই সময়ে মাহফুজ উল্লাহকে সবচেয়ে দরকার ছিল।
সোমবার প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর স্মরণে আয়োজিত নাগরিক শোক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘গ্যারান্টি দিতে পারি আমার অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের কোনো জায়গা নেই। যারা মনে করেন স্বৈরতন্ত্রকে চাপা দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে, বিভিন্ন রকমের প্রভাব খাটিয়ে চিরস্থায়ী হতে পারে তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করছেন।’
ড. কামাল বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্রের আলামতগুলো চারদিকে লেগে থাকে। সেই কারণে নিরাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। এখানে যে উপস্থিতি সবাই ঐক্যের পক্ষে। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে কেন্দ্র করে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। স্বৈরতন্ত্র অনেকবার চেষ্টা করেছে এদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে, চিরস্থায়ী হতে। কেউ কিন্তু পারেনি। আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট গ্যারান্টি দিতে পারি, আমার অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশের স্বৈরতন্ত্রের কোনো জায়গা নেই। যারা মনে করেন স্বৈরতন্ত্রকে চাপা দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে, বিভিন্ন রকমের প্রভাব খাটিয়ে চিরস্থায়ী হতে পারে তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করছেন।’
গণফোরাম সভাপতি বলেন, ‘আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতা করি তখন থেকে তাকে (মাহফুজ উল্লাহ) চিনি। আজকে আমি মোটেও নিরাশ নই। কারণ মাহফুজ উল্লাহকে শ্রদ্ধা জানাতে সব মহলের লোক এখানে একত্রিত হয়েছে। উনাকে সম্মান জানাচ্ছেন কেন, কারণ ঝুঁকি নিয়েছিলেন, সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। যখন উচিত কথা বলার ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, তখন তিনি উচিত কথা বলেছিলেন।’
ঢাবির সাবেক উপচার্য ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘এত অল্প সময়ে মাহফুজ উল্লাহ আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন তা ভাবতে পারছি না। এমন একটি সময় তাকে আমরা তাকে হারিয়েছি যখন তার সততা, স্বচ্ছতা, সাহসিকতা জাতির খু্ব প্রয়োজন ছিল।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মঈনুল হোসেন বলেন, ‘স্বাধীন সাংবাদিকতা আর নেই। যেখানে ভোটাধিকার থাকে না সেখানে কথা বলার স্বাধীনতা থাকে না। পেশাজীবী আইনজীবী, আর সাংবাদিকরা যদি দলীয় কর্মী না হতেন তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যরকম হতো।’
আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘দেশে দুঃসময় চলছে। এই সময় মাহফুজ উল্লাহকে সবচেয়ে দরকার ছিল। জাতির অস্তিত্বই নেই। জাতীয়তাবাদী শক্তি থাকে কী করে। দেশে কোনো রাজনীতি নেই। সত্য কথা বলে বেঁচে থাকা যায় না। যারা সত্য, যাদের সততা আছে তাদের বাঁচার পথ নেই। প্রতিদিন শিশু ধর্ষিত হচ্ছে। কোনো বিচার হচ্ছে না। সাংবাদিক মরে যাচ্ছে, বিচার হচ্ছে না। পুলিশকে কিছু করা যায় না। কারণ পুলিশকে দিয়ে ভোট চুরি করা হয়েছে।’
রব বলেন, ‘কোনো হুমকি, ভয় ভীতি মাহফুজ উল্লাহর কাছে পৌঁছাতে পারেনি। মনের দুঃখে বোধহয় আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গেছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চাইলে আসুন, ঐক্য করি। স্বৈরাচারের বিদায় ঐক্য ছাড়া হবে না।’
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘মাহফুজ উল্লাহ একজন প্রখ্যাত লেখক ও বরেণ্য সাংবাদিক। তার অভাব কোনোদিন পূরণ হবার নয়।’