অনলাইন ডেস্ক: ডায়াবেটিস (বহুমূত্র রোগ) একটি হরমোন সংশ্লিষ্ট রোগ। দেহযন্ত্র অগ্ন্যাশয় যখন যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীর যদি উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তখন আমাদের শরীরে যে রোগ হয় তা হলো ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ। তখন রক্তে চিনি বা শকর্রার উপস্থিতিজনিত অসামঞ্জস্য দেখা দেয়। বর্তমান সময়ে এই ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করবে তালের শাঁস এবং ওলকচু। এমনটি উদ্ভাবন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহিনুর রহমান।
তালের শাঁস ও ওলকচু দু‘টি খাবরের প্রতি আমাদের প্রচলিত কিছু ভ্রান্ত ধারণা থাকলেও এগুলো মূলত ডায়াবেটিস বাড়ায় না বরং পাকা তালের রস, কচি তালের শাঁস, অংকুরিত তালের ভেতরের সাদা অংশ এবং ওলকচুতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি গুণ ফাইটোকেমিকেল থাকায় উপাদান দুটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগে বিগত কয়েক বছর ধরে এক গবেষণায় এ বিষয়টি প্রমাণ করেছে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেখ শাহীনুর রহমান।
শাহিনুর রহমান শাহীন জানান, কচি তালের শাঁস, পাকা তালের রস এবং অংকুরিত তালের আঁটির ভেতরের সাদা শাঁস বাংলাদেশসহ এশিয়ার অনেক দেশে একটি জনপ্রিয় খাবার। ফলটি সুস্বাদু ও পুষ্টি সমৃদ্ধ হলেও খাদ্য কুসংস্কারের কারণে অনেক ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি পাকা তালের রস অথবা এর শাঁস খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। এছাড়া মাটির নিচের সবজি হিসেবে ওলকচুর প্রতিও রয়েছে যথেষ্ট খাদ্য ভীতি। কিন্তু এই ধরনের প্রচলিত ধারণার পক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্যই পাওয়া যায়নি। গবেষণায় দেখা যায় যে, পাকা তালের রস, কচি তালের শাঁস, অংকুরিত তালের আটির ভেতরের সাদা অংশ অথবা ওল কচুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি গুণ ও ফাইটোকেমিকেলে ভরপুর। যা কোনটিই ডায়াবেটিসের মাত্রাকে তো বাড়ায়ই না বরং উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে নিয়ে আসে। স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি এ দু’টি উপাদান পরিমিত মাত্রায় প্রয়োগ করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
এই অনবদ্য গবেষণার স্বীকৃতি স্বরূপ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট জনাব শেখ শাহীনুর রহমানকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করেন। গবেষণা প্রকল্পটির কো-সুপারভাইজার এবং সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন যথাক্রমে একই বিভাগের অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম এবং অধ্যাপক শেখ মো. আব্দুর রউফ।