ইউক্রেনের খেরসনে তেলের স্থাপনায় শনিবার (১৯ নভেম্বর) ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। রুশ সেনারা অঞ্চলটি ছেড়ে যাওয়ার পর প্রথমবার এ হামলার ঘটনা ঘটল। চলমান যুদ্ধের মধ্যেই প্রথমবারের মতো ইউক্রেন সফরে গিয়ে কিয়েভকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। খবর আল-জাজিরার।
স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন শহরের একটি তেলের ডিপোতে পরপর দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। বিস্ফোরণের পর কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় চারপাশ। রুশ বাহিনীর অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়ার পর প্রথম কোনো হামলার ঘটনা ঘটল। তবে কারা এ হামলা চালিয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। একই দিন রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে তেলের পাইপলাইনে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। পাইপলাইনের লিকেজ থেকেই এ বিস্ফোরণ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো কিয়েভ সফরে গেছেন ঋষি সুনাক। এ সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাজ্যের সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা জানান তিনি। ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নতুন একটি বিশাল প্যাকেজ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
ঋষি সুনাক বলেন, ‘চলতি বছর ২৩০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছি। আগামী বছরও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আপনারা রুশ বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করেছেন। তবে আপনাদের অনেক অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। তাই আমরা ১২০টি বিমানবিধ্বংসী অস্ত্র, রাডার ও অ্যান্টি-ড্রোন সরঞ্জামাদিসহ বেশ কিছু আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করব।’
এদিকে, গত নয় মাসের যুদ্ধে রুশ বাহিনীর হামলায় কয়েকশ শিশু প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছে কিয়েভ। আর রাশিয়ার দাবি, তাদের বেশ কয়েকজন সেনাকে বিনা অপরাধে ফাঁসি দিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে ‘সাময়িক যুদ্ধবিরতি’র ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) তিনি বলেন, এটি কেবল পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করবে।
হ্যালিফ্যাক্স আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ফোরামে সম্প্রচারিত বক্তব্যে ইউক্রেনের এ নেতা বলেন, ‘ফের শক্তি অর্জনে রাশিয়া এখন সাময়িক যুদ্ধবিরতির সুযোগ খুঁজছে। কেউ এটাকে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি বলতে পারে। তবে এ ধরনের সাময়িক যুদ্ধবিরতি পরিস্থিতিকে কেবল আরও খারাপ করবে।’ তিনি বলেন, ‘কেবল রাশিয়ার সামরিক অভিযানের সম্পূর্ণ ধ্বংসের ফলাফল হতে পারে একটি সত্যিকারের বাস্তব, দীর্ঘস্থায়ী এবং সৎ শান্তি।’
মস্কোর ফেব্রুয়ারির সামরিক অভিযানের কারণে ছড়িয়ে পড়া প্রায় নয় মাসের যুদ্ধের অবসানে আলোচনায় বসতে যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভকে চাপ দিচ্ছে–এমন কথা প্রত্যাখ্যান করে হোয়াইট হাউস আগের দিন জানায়, রাশিয়ার সঙ্গে কখন আলোচনা শুরু করতে হবে, তা কেবল জেলেনস্কি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
তবে মার্কিন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা জেনারেল মার্ক মিলি সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পরামর্শ দিয়েছেন, কিয়েভ মস্কো বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রে জয়লাভের সুবিধা নিতে এবং এ সংঘাতের অবসানে খোলামেলা আলোচনা করতে পারে।