মোশাররফ করিম অপু আসামি
নিজস্ব প্রতিবেদক: আশুলিয়ার জাহাঙ্গীর সিকদার হত্যা মামলার আসামী মোশারফ করিম অপু উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিনে এসে বাদি আক্তার হোসেন ও তার পরিবারের লোকজনকে মামলা তুলে নিতে অব্যহত হুমকি দেওয়ায় প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ওই পরিবার। ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটছে বাদী পরিবারের।
জানাগেছে, সাভারের বিরুলিয়া দত্তপাড়া গ্রামের মৃত তৈয়ব আলী মাদবরের ছেলে আক্তার হোসেন (২৭) এর সঙ্গে একই গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে মোশারফ করিম অপু, মহর আলীসহ তার ছেলে জাকির ও হামিদ এবং খালেকের ছেলে আনছার আলী, আব্দুল ব্যাপারীর ছেলে আশ্রব আলী গংদের দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জেরধরে গত ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি বিকালে আক্তার হোসেন নিজস্ব মোটর সাইকেল যোগে তার ভাগিনা জাহাঙ্গীর সিকদার (২৫) ও মামাতো ভাই ফারুক হোসেন (২৫) কে সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়া মডেল টাউনের লেকপার্কে বেড়ানোর জন্য যাওয়ার পথিমধ্য উক্ত স্থানের উত্তরের রাস্তার উপর পৌছামাত্র পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা মোশারফ করিম অপু, জাকির, হামিদ আলীসহ তার লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে আক্রোমন করে। একপর্যায়ে মোশারফ করিম অপুর কাছে থাকা চাপাতি দিয়ে জাহাঙ্গীর সিকদারকে এলোপাতারি ভাবে কোপাতে থাকে। জাহাঙ্গীর শিকদারকে ফারুক ও আক্তার হোসেন বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তাদেরকেও এলোপাতারি মারপিট করায় প্রাণভয়ে আক্তার হোসেন পালিয়ে লোকালয়ে গিয়ে আত্নাচিৎকার করতে থাকে। ফলে আস্তে আস্তে স্থানীয় লোকজন সমবেত হতে থাকলে অপু ও তার লোকজন অস্ত্র উচিয়ে বিরদর্পে চলে যায়। পরে গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় জাহাঙ্গীর শিকদার, ফারুক ও আক্তার হোসেনকে উদ্ধার করে সাভারস্থ এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সকাল ৮টার দিকে জাহাঙ্গীর শিকদার মারা যায়।
এ ঘটনায় নিহতের মামা আক্তার হোসেন বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৫০৬/৩৪ ধারা মোতাবেক একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। জাহাঙ্গীর শিকদার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ায় ২৭/০১/২০১৮ইং মামলার এজাহারে ৩০২ ধারা সংযোজনের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা ইবনে ফরহাদ আদালতে আবেদন করে। এ মামলার আসামী সাভারের দত্তপাড়া গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে মোশারফ করিম অপু, মহর আলীর ছেলে জাকির ও করম আলীর ছেলে আজিম উদ্দিন ওরফে আজিজ এবং হানিফের ছেলে আলা উদ্দিনকে পুলিশ দুই দিন করে রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে।
পরে বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে এসে মোশারফ করিম অপু, শাহ সেকেন্দার আলী, আব্দুল বারেক মামলা তুলে নিতে মামলার বাদী আক্তার হোসেনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯-০৫-১৯ইং রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোশারফ হোসেন অপু ও শান্ত মোটর সাইকেল যোগে দত্তপাড়াস্থ মামলার বাদী আক্তার হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তাকে মামলা তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করে। এ সময় আক্তার হোসেন মামলা তুলে নিতে অস্বীকার করলে মোশারফ হোসেন অপু শর্টগান দিয়ে দুই রাউণ্ড ফাঁকা গুলি করে। পরে গুলির শব্দ পেয়ে আশপাশের লোকজন আসতে থাকলে মামলা তুলে না নিলে সাক্ষী ও বাদীকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে অপু ও তার লোকজন চলে যায়। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় আক্তার হোসেন একটি জিডি দায়ের করেন। যার নং ১০৫৩।
নিহতের পরিবারের লোকজন অভিযোগ করে বলেন, মোশারফ করিম অপু বিজ্ঞ আদালত থেকে আগাম জামিনে এসে মামলা তুলে নিতে বার বার চাপ সৃষ্টি করছে। এ কারনে মোশারফ করিম অপুসহ বিজ্ঞ আদালত হতে আগাম জামিন প্রাপ্ত আসামীদের জামিন বাতিল করার জন্য বিজ্ঞ বিচারকের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন বাদী পরিবার। মামলার বাদী আক্তার হোসেনসহ সাক্ষীদের পরিবারের লোকজনের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে বিচারক মহদ্বয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সুধিমহল। তাদের জামিন বাতিল না যে কোন মহুত্বে আসামীরা আবারও একত্রিত হয়ে প্রাণনাশের মতো ঘটনা ঘটাতে পারে বলে এলাকাবাসীর অভিমত।