ক্রীড়া ডেস্ক : ২০১২ সালে মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাওয়া সেঞ্চুরিতে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এমন কীর্তি গড়েছিলেন ভারতের ব্যাটিং ঈশ্বর। শুধু ভারতীয় ক্রিকেট নয়, গোটা ক্রিকেট বিশ্বের জন্য ছিল আনন্দময় দিন।
টেন্ডুলকার ৯৯তম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন বিশ্বমঞ্চে। ২০১১ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নাগপুরে ১১১ রান করেছিলেন। ৯৯ থেকে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরিতে যেতে ওয়ানডে ও টেস্ট মিলিয়ে মোট ৩৫ ইনিংস খেলেছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এ সময়ে সেঞ্চুরির কাছাকাছি যেতে পেরেছেন দুইবার। একবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওভালে ৯১ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মুম্বাইয়ে ৯৪ রান করেছিলেন। দুইবারই নাভার্স নাইন্টিজে গিয়ে পথ হারান।
তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওভালের ইনিংসটি স্মরণীয় হয়ে থাকত পারত, যদি আম্পায়ার রড টাকার ভুল সিদ্ধান্ত না দিতেন। সেদিন ইংলিশ পেসার টিম ব্রেসনানের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন টেন্ডুলকার। স্বাগতিক দলের আবেদনে সাড়া দিয়ে টেন্ডুলকারকে সাজঘরের পথ দেখান অস্ট্রেলিয়ান আম্পায়ার। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় বল লেগ স্ট্যাম্প মিস করে বেরিয়ে যাচ্ছিল। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যান সমর্থকরা। এরপর তারা টিম ব্রেসনান ও আম্পায়ার রড টাকারকে হত্যার হুমকি দেন তারা।
‘ইয়র্কশায়ার ক্রিকেট: কভার্স অফ’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ব্রেসনান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন,‘ওই বলটা লেগ স্ট্যাম্প মিস করে যাচ্ছিল। কিন্তু আম্পায়ার তাকে আউট দিয়েছিল। সেদিন টেন্ডুলকার ৮০ রানের বেশি (আসলে ৯১) করেছিল। হয়তো সেদিন সেঞ্চুরিটা হয়ে যেত। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তে হয়নি। আমরা সেবার সিরিজটি জিতেছিলাম এবং টেস্টে নম্বর ওয়ান পজিশনে চলে যাই।’
হত্যার হুমকির বিষয়ে ব্রেসনান বলেন,‘আমি এবং আম্পায়ার দুইজনই হত্যার হুমকি পেয়েছি। বিভিন্ন সময়ে সেই হুমকিগুলো এসেছে। আমি টুইটারে সেসব হুমকি পেয়েছি এবং আম্পায়ার রড টাকারের ঘরের ঠিকানায় চিঠি যেত। ওখানে লিখা থাকত,‘‘তাকে আউট দেওয়ার সাহস কি করে হলও তোমার? বলটা লেগ স্ট্যাম্প মিস করছিল।’’’
ব্রেসনান আরও জানান, ওই ঘটনার পর রড টাকারকে বাসার আশেপাশে নিরাপত্তা বাড়াতে হয়েছিল। তাঁর ভাষ্য,‘ও আমায় বলেছিল, বন্ধু আমার বাসায় তো নিরাপত্তা সদস্য ও অন্যান্য কিছু কাজ করা লেগেছে। তার জন্য পুলিশ সুরক্ষার ব্যবস্থাও করতে হয়েছিল।’
২০১৩ সালে টেন্ডুলকার অবসরে যান। নামের পাশে ১৫৯২১ টেস্ট রান ও ১৮৪২৬ ওয়ানডে রান নিয়ে অবসরে গেছেন। ম্যাজিকাল সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি তো আছেই।