আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আর মাত্র অল্প কিছুদিন হাতে আছে। তারপরেই যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সে হিসেবে ট্রাম্পের হাতে এক সপ্তাহও সময় নেই। কিন্তু এক একটা দিন চরম উত্তেজনা আর আশঙ্কায় অতিবাহিত হচ্ছে। বিশেষ করে গত সপ্তাহে দেশটির পার্লামেন্ট ভবনে হামলার পর থেকেই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। ক্ষমতা ছাড়ার আগে একের পর এক বিতর্কিত ঘটনার কারণে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যেই বিদায় নেয়ার মাত্র এক সপ্তাহ আগে এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রশাসন ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
গত বুধবার ইরানের দুটি ফাউন্ডেশন এবং তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মার্কিন প্রশাসন দাবি করছে, এই দুটি প্রতিষ্ঠান ইরানের অর্থনীতির বৃহৎ অংশের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় ইরানের যে দুটি ফাউন্ডেশনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তার একটি হচ্ছে- ইসলামি বিপ্লবের মহান নেতা ইমাম খোমেনীর নির্দেশ বাস্তবায়নকারী সংস্থা এবং অন্যটি হচ্ছে আস্তান কুদস রাজাভি। এই সংস্থাটি ইমাম রেজার (আ.) মাযার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে থাকে। ইমাম রেজা হচ্ছেন শিয়া মুসলমানদের ৮ম ইমাম।
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ফাউন্ডেশন দুটির নেতা এবং তাদের সহযোগীদের সম্পদ জব্দ করা হবে এবং যারা এসব ফাউন্ডেশনের সঙ্গে লেনদেন করবে তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ইরান হচ্ছে আল কায়েদার নতুন ঘাঁটি। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ইরানের বিরুদ্ধে এমন বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। যদিও এ বিষয়ে তিনি কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। অন্যদিকে তার এ ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান।
পম্পেও এক বিবৃতি বলেন, আল কায়েদা তাদের নেতৃত্বের কেন্দ্র তেহরানে গড়ে তুলেছে এবং তাদের নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরির প্রতিনিধিরা বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন।
তার মতে, ২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসনের সময় থেকেই তেহরানের সঙ্গে আল কায়েদার সম্পর্কের ব্যাপকভাবে উন্নতি ঘটতে শুরু করে। সে বছরই যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ব্রিটেনের সঙ্গে ইরানে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির ফলে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরান তার ইউরেনিয়ামের মজুদ সীমাবদ্ধ করে রেখেছিল।
আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা জো বাইডেনকে হস্তান্তর করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেদিন মাইক পম্পেওর জন্যও তার কার্যালয়ের শেষ দিন। কিন্তু ক্ষমতা শেষ হওয়ার আগে পম্পেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইরানের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ট্রাম্প ইরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাচ্ছে।