বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

কাশ্মীর জুমার নামাজের পরেই বিক্ষোভে উত্তাল

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৯
  • ২৮২ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, সিটিজেন নিউজ: কাশ্মীরে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়েছিল। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের সৌরা এলাকায় ওই বিক্ষোভ চলাকালীন হঠাৎ করেই তা হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা পাথর ছোঁড়া শুরু করলে এর জবাবে ছররা গুলি আর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনী। খবর বিবিসি।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি অন্তত দু’জনকে আহত হতে দেখেছি। কিন্তু প্রশাসনের তরফ থেকে আহতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত জানানো হয়নি।

সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর দু’সপ্তাহ আগে এই সৌরা এলাকাতেই শুক্রবারের নামাজের পরে প্রথম বড়সড় বিক্ষোভ হয়েছিল। গত শুক্রবারও নামাজের পর একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল হয়েছিল। সেদিন কোনো ঝামেলা হয়নি।

গতকাল জুমার নামাজের পর স্বাধীনতাপন্থী কিছু স্লোগান ওঠে। তারপর একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়। সেখানে তখন কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। গত সপ্তাহের মতোই এই বিক্ষোভ মিছিল নানা অলি-গলি ঘুরে শেষ হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই এক জায়গায় গলির ভেতর নিরাপত্তা বাহিনী ঢুকতে চেষ্টা করে। তখনই অশান্তি শুরু হয়।

নিরাপত্তাবাহিনী যাতে ভেতরে ঢুকতে না পারে সেজন্য বড় রাস্তা থেকে যত গলি ভেতরে ঢুকেছে সেইসব গলিগুলো খুঁড়ে রাখা হয়েছে। আবার কোথাও বড় বড় ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

পুলিশের গাড়ি যেন ভেতরে ঢুকতে না ঢুকতে পারে সেজন্যই এই ব্যবস্থা। ভেতরে ঢুকতে গেলে পুলিশকে হেঁটেই ঢুকতে হবে। এরকমই একটা গলি দিয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে নিরাপত্তা বাহিনীর একদল সদস্য।

আর সৌরাতে একটা ব্যবস্থা রয়েছে। যখনই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ বাঁধে, তখনই সব বাড়ি থেকে টিন বাজানো শুরু হয়ে যায়। আর সব মানুষ বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে সংঘর্ষে নেমে পড়ে। গতকালও সে রকম ঘটনাই ঘটেছে।

পুলিশ আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর দল গলির ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করতেই পাথর ছোঁড়া শুরু হয় একদিকে আর অন্যদিকে সব বাড়ি থেকে টিন বাজানো হয়। সবাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ওই গলি দিকে দৌড়াতে থাকে।

একদিক থেকে পাথর ছোঁড়া হচ্ছে, অন্যদিক থেকে ছররা গুলি, কাঁদানে গ্যাস আর গোলমরিচের গোলা ছোঁড়া হচ্ছিল। এতে দু’জন ছররা গুলিতে আহত হয়েছে। একজনের চোখ থেকে রক্ত বেরুচ্ছিল আর অন্য একজনের ঘাড়ে ছররা গুলির আঘাত লেগেছিল।

ওই সংঘর্ষ প্রায় দু’ঘন্টা ধরে চলেছে। এখনও পর্যন্ত প্রশাসন নির্দিষ্ট করে আহতদের সংখ্যা জানায়নি। দু’দিন ধরেই একটা পোস্টার লাগানো হয়েছিল শহরের নানা জায়গায় যে, শুক্রবারের নামাজের পর বিক্ষোভ হবে। সবাইকে আহ্বান জানানো হয়েছিল শ্রীনগরে জাতিসংঘের কার্যালয়ের দিকে মিছিল করে যাওয়ার জন্য। হুরিয়ত কনফারেন্সের নামে ওই পোস্টার লাগানো হয়েছিল।

কিন্তু জাতিসংঘের কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার একটি বাদে সব রাস্তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সকাল থেকেই। সেখানে ব্যাপক নিরাপত্তা জারি করা হয়েছিল। সেদিকে কোনও মিছিল যেতে পারেনি।

৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর তৃতীয় সপ্তাহের মতো শুক্রবারের নামাজের জন্য বড় জমায়েতের অনুমতি দিচ্ছে না প্রশাসন। সোপিয়ান, কুলগাম, বারামুল্লা, কুপওয়াড়া এবং অনন্তনাগ এলাকাতেও একই ধরণের বিধিনিষেধ চালু রয়েছে। মাইক বাজানোরও অনুমতি নেই কোনও মসজিদে।

বড় মসজিদগুলোতে শুক্রবারের নামাজের জমায়েতের অনুমতি না থাকলেও এলাকার ছোট ছোট মসজিদগুলিতে নামাজ পড়তে কোনও বাধা নেই।

কয়েকদিন ধরেই নিরাপত্তা কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবারের নামাজের পর বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়ে পোস্টার দেয়ায় প্রশাসন আবারও কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। কিন্তু প্রশাসন এটাও বলছে যে, কড়াকড়ি আবারও শিথিল করা হতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com